চতুর্থ দফায় সুখবর! ভাঙল ২০১৯-এর ভোটের রেকর্ড, এগিয়ে বাংলা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 14 May 2024

চতুর্থ দফায় সুখবর! ভাঙল ২০১৯-এর ভোটের রেকর্ড, এগিয়ে বাংলা


চতুর্থ দফায় সুখবর! ভাঙল ২০১৯-এর ভোটের রেকর্ড, এগিয়ে বাংলা 



প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৪ মে: লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোট গ্ৰহণ হয় সোমবার। আগের দফাগুলোর তুলনায় এই দফায় ভোট পড়েছে দ্রুতগতিতে এবং ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৯৬টি আসনে ৬৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শেয়ার করা সর্বশেষ ভোটের তথ্যে একথা জানানো হয়েছে। কমিশনের মতে, রাত ১১.৪৫ পর্যন্তের তথ্য অনুযায়ী, ৬৭.২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা ২০১৯ সালের সংসদ নির্বাচনের এই পর্যায়ের তুলনায় ১.৭৪ শতাংশ বেশি। কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে যে, এগুলো 'অস্থায়ী' পরিসংখ্যান এবং আপডেট করা হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার পর, এখন পর্যন্ত ২৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৩৭৯টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।


অন্ধ্রপ্রদেশ, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের জন্যও ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। বর্তমান সাধারণ নির্বাচনে প্রথম দফায় ৬৬.১৪ শতাংশ, দ্বিতীয় দফায় ৬৬.৭১ শতাংশ এবং তৃতীয় দফায় ৬৫.৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল। চতুর্থ দফার ভোটের সময় অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতার বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে।


চতুর্থ দফায় তেলেঙ্গানার ১৭টি, অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫টি, উত্তরপ্রদেশের ১৩টি, বিহারের পাঁচটি, ঝাড়খণ্ডের চারটি, মধ্যপ্রদেশের ৮টি, মহারাষ্ট্রের ১১টি, ওড়িশার ৪টি, পশ্চিমবঙ্গের ৮টি এবং জম্মু-কাশ্মীরের একটি আসনে ভোট হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৭৮.৪৪ শতাংশ ভোট রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই পর্বে রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ।


এরপর অন্ধ্রপ্রদেশে ৭৮.২৫ শতাংশ এবং ওড়িশায় ৭৩.৯৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পরে উপত্যকায় প্রথম লোকসভা নির্বাচনের সময় জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর কেন্দ্রে ৩৭.৯৮ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং নির্বাচন কমিশন বলেছে যে এটি 'দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটদান'। বিহারে ৫৭.০৬ শতাংশ, ঝাড়খণ্ডে ৬৫.৩১ শতাংশ, মহারাষ্ট্রে ৫৯.৬৪ শতাংশ, তেলেঙ্গানায় ৬৪.৮৭ শতাংশ এবং উত্তর প্রদেশে ৫৮.০৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। মধ্যপ্রদেশে ৭১.৭২ শতাংশ ভোট পড়েছে।


একটি ভিডিও ক্লিপ সামনে আসার পর তেলঙ্গানার হায়দরাবাদ লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী মাধবীলতার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আধিকারিকরা মামলা দায়ের করেছেন। ভিডিওতে তিনি বোরকা পরা নারী ভোটারদের তাদের মুখ দেখাতে বলছেন বলে অভিযোগ। অন্ধ্রপ্রদেশে, তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) এবং ওয়াইএসআরসিপি একে অপরকে পালানাডু, কুদ্দাপাহ এবং আন্নামাইয়া জেলায় সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছে।


ওয়াইএসআরসিপি (YSRCP) নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে প্রতিদ্বন্দ্বী টিডিপিরং ওপর ভেমুরু, দারসি, ইচ্ছাপুরম, কুপ্পাম, মাছেরলা, মার্কাপুরম, পালাকোন্ডা এবং পেদাকুরাপোডু সহ বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। অন্ধ্রপ্রদেশের ১৭৫টি বিধানসভা এবং ২৫টি লোকসভা আসনের জন্য একযোগে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ওয়াইএসআরসিপি অভিযোগ করেছে যে, টিডিপি নেতারা ভেমুরু কেন্দ্রের পাঁচটি ভোট কেন্দ্র দখল করেছে।


পুলিশ জানিয়েছে, যুবজন শ্রমিক রাইথু কংগ্রেস পার্টি (ওয়াইএসআরসিপি) নেতা এবং তেনালি বিধায়ক এ. শিবকুমার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের সঙ্গে তর্কের পর একজন ভোটারের সঙ্গে ঝগড়া ও হাতাহাতি করেন । এদিকে, টিডিপি এমএলসি মোহাম্মদ আহমেদ শরীফ প্রধান নির্বাচনী অফিসার মুকেশ কুমার মীনাকে একটি চিঠি লিখেছেন পালনাডু জেলার রেন্টিচিনতলা মণ্ডলের রেনতলা গ্রামে ওয়াইএসআরসিপি কর্মীদের দ্বারা টিডিপি সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন।


ওয়াইএসআরসিপি একটি বিবৃতিতে বলেছে যে, টিডিপি কর্মীরা প্রবীণ ওয়াইএসআরসিপি নেতা নন্দীগাম সুরেশের গাড়ির ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ করা হয়েছে যে, টিডিপি সমর্থকরা দারসি নির্বাচনী এলাকার আরাবলিপাডুতে দলের সদস্য বি অঞ্জি রেড্ডিকে আক্রমণ করেছে, যার ফলে মাথায় আঘাত লেগেছে। টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু অভিযোগ করেছেন, "মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য রাজ্যে কোনও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নেই।"


লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায়, পশ্চিমবঙ্গের আটটি সংসদীয় আসনে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বীরভূম এবং বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনের অধীনে বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, দুপুর ১টা পর্যন্ত ইভিএমে ত্রুটি ও এজেন্টদের বুথে প্রবেশ বন্ধ করার প্রায় ১,৭০০ অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে।


বিজেপি নেতা তথা প্রার্থী দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন দুই সিআইএসএফ নিরাপত্তা কর্মী বর্ধমানে পাথর ছোড়ার ঘটনায় আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। সিআইএসএফ 'এক্স'-এ একটি পোস্টে বলেছে যে, দিলীপ ঘোষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সিআইএসএফ জানিয়েছে, 'বর্ধমানে কিছু দুষ্কৃতীদের দ্বারা সিআইএসএফ এসএসজি নিরাপত্তা কর্মীদের উপর পাথর ছোড়া এবং তাদের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যাতে দুই সিআইএসএফ কর্মী মাথায় আঘাত পান। সুরক্ষা-প্রাপ্ত ব্যক্তি(দিলীপ ঘোষ)-কে কোনও প্রকার বলপ্রয়োগ ছাড়াই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।'


 দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, "পুলিশ শুধু নিরব দর্শক হয়েই তৃণমূলের সন্ত্রাসের রাজত্ব বজায় রেখেছে, তৃণমূলের গুন্ডারা আমাদের পোলিং এজেন্টদের মারধর করেছে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেয়নি।"


কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের ছাপড়া এলাকায়ও উত্তেজনা দেখা দেয়, যখন তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ। বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রাই আহত দুজনকে নিয়ে ছাপড়া থানায় পৌঁছান। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। সূত্র জানায়, তৃণমূল, বিজেপি এবং কংগ্রেস-সিপিআই(এম) জোট ভোটের প্রথম কয়েক ঘন্টার মধ্যে নির্বাচনী সহিংসতা, ভোটারদের ভয় দেখানো এবং নির্বাচনী এজেন্টদের ঝপর হামলার পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছে।


অপরদিকে উত্তরপ্রদেশে রাস্তাঘাট ও উন্নয়ন কাজের অভাবের প্রতিবাদে শাহজাহানপুরের কয়েকটি গ্রামে মানুষ ভোট বয়কট করেছে। ওড়িশারও অনেক জায়গায় ইভিএম ত্রুটির খবর পাওয়া গেছে। একজন আধিকারিক জানিয়েছেন যে, এখনও পর্যন্ত ৬৫টি ব্যালট ইউনিট (বিইউ), ৮৩টি কন্ট্রোল ইউনিট (সিইউ) এবং ১১০টি ভিভিপিএটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।


 সকাল সাতটায় প্রকৃত ভোটের আগে অনুশীলনের সময় বেশিরভাগ ইউনিট প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে, মাওবাদীরা একটি গাছ কেটে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার ব্যাহত করার চেষ্টা করেছিল এবং পশ্চিম সিংভূম জেলার প্রত্যন্ত সোনাপি এবং মোরাংপোঙ্গা এলাকায় যাওয়ার রাস্তা অবরুদ্ধ করেছিল, যা নিরাপত্তা বাহিনী ব্যর্থ করেছিল।


জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর লোকসভা আসনে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে, যেখানে আবদুল্লাহ পরিবারের তিন প্রজন্ম তাদের ভোট দিয়েছে। দেশে পরবর্তী তিন দফায় ভোট হবে ২০ মে, ২৫ মে এবং ১ জুন। ভোট গণনা হবে ৪ জুন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad