শারীরিক বাধা জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল জয়দীপের - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday 10 May 2024

শারীরিক বাধা জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল জয়দীপের


 শারীরিক বাধা জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল জয়দীপের 




নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুর, ১০ মে: সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে তার লড়াইয়ের কাহিনী। বিরল দুরারোগ্য এনকোলাইটিস স্পন্ডেলাইটিসের সাথে লড়াই করেও উচ্চমাধ্যমিকে চোখ ধাঁধানো সাফল্য বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র জয়দীপ সামন্তের। জয়দীপ এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪৮২ নম্বর পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। জয়দীপের এই নম্বর তার স্কুলের মধ্যে সেরা। 


এনকোলাইটিস স্পন্ডেলাইটিসের কারণে জয়দীপের মেরুদন্ড বেঁকে গিয়েছে, কার্যত কুজো হয়ে গিয়েছে সে। যে কারণে তার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে- আসতেও অন্যের সাহায্য নিতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার টেস্টের ঠিক আগের মুহূর্তে এই রোগের কারণেই জয়দীপকে শয্যাশায়ী হয়ে থাকতে হয়েছিল বেশ কিছুদিন। সেই বাধা কাটিয়েও জয়দীপের এই অভাবনীয় ফল অন্যদের অনুপ্রেরণা জাগাতে বাধ্য। 


এবছর জয়দীপ বাংলায় ৯৫, ইংরেজিতে ৯৭, ইতিহাসে ৯৩, ভূগোলে ৯৮ ,রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯৭, দর্শনে ৯৫ পেয়েছে। যদিও জয়দীপ তার ফল নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ রয়েছে। তার পছন্দের বিষয় ইতিহাসে আরও বেশি নম্বর পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জয়দীপ। জয়দীপ জানিয়েছে, তাঁর পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তিন থেকে চার ঘন্টা পড়ত। টেস্ট পরীক্ষার পরে সেই সময়টা ৮ থেকে ৯ ঘন্টায় বাড়িয়ে নিয়েছিল। জয়দীপ বড় হয়ে আইপিএস হতে চায়, যার জন্য সে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বলে জয়দীপ জানিয়েছে।


আগামী দিনে জয়দীপ বেলুড় মঠ কিংবা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ইতিহাস অনার্স নিয়ে পড়তে চায়। পড়াশোনা ছাড়াও জয়দীপ ক্যুইজ খেলতে ভালবাসে। জয়দীপের বাবা অসিত কুমার সামন্ত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী মা অঞ্জনা সামন্ত গৃহবধূ। জয়দীপের বাবা অসিত বাবুর কথায়, জয়দীপের এই রোগটি জিনগত সমস্যার কারণে হয়েছে। 


জয়দীপের স্কুল বালুরঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৃজিত সাহার কথায়, পরীক্ষার সময় জয়দীপ এমনই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল সে তার বাঁ হাত দিয়ে ডান হাতকে ধরে অতি কষ্টে পরীক্ষা দিয়েছে। এমনকি একসময় এমনও এসেছিল যে জয়দীপ বিছানাতে শুয়েও পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা সেই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল।জয়দীপ অন্য কারও সাহায্য ছাড়াই নিজেই নিজের পরীক্ষা দিয়ে এই সাফল্য পেয়েছে। জয়দীপের এই সাফল্য অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান শিক্ষক।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad