'আমি গালি-প্রুফ হয়ে গিয়েছি': প্রধানমন্ত্রী মোদী
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৮ মে: লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্বের ভোটের আগে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সময়, নির্বাচনী প্রচারের সময় ব্যক্তিগত আক্রমণ সম্পর্কিত প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'কেউ আমাকে মৃত্যুর সদাগর বলেছেন, কেউ আমাকে নোংরা ড্রেনের কীট বলেছেন। ২৪ বছর ধরে এই ধরনের দুর্ব্যবহার সহ্য করার পর আমি গালি-প্রুফ হয়ে গিয়েছি।'
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'সংসদে আমাদের এক সাথী হিসেব করেছিলেন, ১০১টি গালি গুনিয়েছিলেন, তাই নির্বাচন হোক বা না হোক, এই লোকেরা (বিরোধীরা) বিশ্বাস করে যে, গালাগালি করার অধিকার তাদেরই এবং এতটাই হতাশ-নিরাশ হয়ে গিয়েছে যে, গালি দেওয়া, অপশব্দ বলা তাদের স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'বাংলার নির্বাচনে তৃণমূল অস্তিত্বের লড়াই লড়ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে আমরা ছিলাম ৩-এ এবং বাংলার মানুষ আমাদের ৮০ তে পৌঁছে দিয়েছিল। গত নির্বাচনে আমরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি। এবার গোটা ভারতে বেস্ট পারফর্মিং স্টেট যদি হবে, তা হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপি সবচেয়ে বেশি সাফল্য পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। সেখানকার নির্বাচন একতরফা।
মুসলমানদের জন্য ওবিসি কোটা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ এবং এরপর হাইকোর্টের আদেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'যখন (কলকাতা) হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত আসে, তখন স্পষ্ট হয়ে যায় যে এত বড় জালিয়াতি হচ্ছিল। কিন্তু তার চেয়েও দুঃখের বিষয় হল, তারা এখন ভোটব্যাংকের রাজনীতির জন্য বিচার বিভাগের অপব্যবহার করছে। এটা কোনও অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।'
কাশ্মীরে রেকর্ড ভোট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'উপত্যকার মানুষ ভোট দিয়ে বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে। আজ এটা সত্য হয়ে উঠেছে যে, ৩৭০ অপসারণের পর একতা দেখা যাচ্ছে, তার প্রভাব নির্বাচনের ফলাফলের ওপরেও দেখা যাবে।'
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য গণতন্ত্র ধ্বংস করা হচ্ছে। আমি সংসদে কংগ্রেস সাংসদদের বলতে শুনেছি যে, আপনারা সংরক্ষণ বাতিল করতে চান। কিন্তু এটা আমার নজরে এসেছে যে যারা নিজেদের দলিত ও আদিবাসীদের এত শুভাকাঙ্ক্ষী বলে তারা তাদের কট্টর শত্রু। তারা রাতারাতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়কেও সংখ্যালঘু মর্যাদা দিয়ে দেয় এবং সংরক্ষণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। সংবিধানের পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি কংগ্রেসের ইশতেহার দেখার সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম বলেছিলাম যে, এতে মুসলিম লীগের ছবি দেখা যায়। তারা প্রথমে জবাব দেয়নি। এর পরে আমি এক একটি জিনিস ফিল্টার করেছি। এরা খেলাধুলায় সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণ দেওয়ার কথা বলেন। বলেন, আমার দেশের যুবরা ফের কোথায় যাবে। এরা বলেন, এই লোকেরা টেন্ডারেও সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণ দেবে। অর্থাৎ একটি সেতুর জন্য টেন্ডার করা হবে, বর্তমানে ব্যবস্থা এমন যে প্রতিযোগিতা আছে, যে এগিয়ে আসবে সে টেন্ডার পাবে। কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে টেন্ডার দিয়ে দিলে এবং সেতু ভেঙ্গে গেলে বড় বিপদ হবে।'
বিজেপি ক্ষমতায় এলে রিজার্ভেশন শেষ হয়ে যাবে, এই প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'আমি তাদের পর্দাফাঁস করে দিয়েছি, তাই এই লোকেরা মিথ্যা ছড়াচ্ছে।'
কেজরিওয়াল জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। কেজরিওয়াল বলেছেন যে কে জেলে যাবেন তা প্রধানমন্ত্রী মোদীই ঠিক করেন। আমাকে জেলে পাঠানো হয়েছে এবং হেমন্ত সোরেনকে জেলে পাঠানো হয়েছে- এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'এই লোকদের সংবিধান পড়া ভালো হবে। দেশের নিয়ম-কানুন পড়ুন, আমার কিছু বলার দরকার নেই।'
কাশ্মীরে রেকর্ড ভোট নিয়ে কী বললেন মোদী?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কাশ্মীরের পরিস্থিতি বদলেছে, আমি বিচার বিভাগের কাছে প্রার্থনা করতে চাই যে সরকার একটি কৌশল অনুযায়ী কাজ করে। মাঝে মাঝে ইন্টারনেট বন্ধ করতে হতো। কোনও কোনও এনজিও আদালতে গেলে আদালতে বড় ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু আজ সেখানকার শিশুরা গর্ব করে বলছে, ইন্টারনেট বন্ধ হয়নি ৫ বছর ধরে। আমরা ভালো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি। ভোট মানে ভারতের সংবিধানকে আলিঙ্গন করে। গর্বের সাথে ভারত সরকার গঠনে অংশ নেয়।'
তিনি বলেন, 'কাশ্মীরের মানুষ বিশ্বাস করে যে, এই সরকার এমন যেখানে ন্যায়পরায়ণতা আছে। যখন তাদের বিশ্বাস হয়ে যায় যে, কোন হেরফের হচ্ছে না। তার পরিণাম হচ্ছে কাশ্মীরে ভোটের ৪০-৪০ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে গেছে।'
No comments:
Post a Comment