স্বয়ং দেবী খেয়ে যান রসগোল্লা! জাগ্ৰত এই মন্দিরে প্রতিটি মুহূর্তে ঘটে অলৌকিক ঘটনা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday 24 June 2024

স্বয়ং দেবী খেয়ে যান রসগোল্লা! জাগ্ৰত এই মন্দিরে প্রতিটি মুহূর্তে ঘটে অলৌকিক ঘটনা




 স্বয়ং দেবী খেয়ে যান রসগোল্লা! জাগ্ৰত এই মন্দিরে প্রতিটি মুহূর্তে ঘটে অলৌকিক ঘটনা


প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৫ জুন: এই জাগ্রত দেবী মন্দিরে মুহূর্তে ঘটে অলৌকিক ঘটনা! স্বয়ং দেবী খেয়ে যান রসগোল্লা। ভক্তদের কাছে ফুল নিয়ে বাঁধেন খোপায়। কোথায় রয়েছে এই জাগ্রত দেবী মন্দির? এই মন্দির ঘিরে রয়েছে প্রচুর অলৌকিক কাহিনী। জানুন শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরের ইতিহাস! 


 আসানসোল কিসের জন্য বিখ্যাত প্রশ্ন করলে আট থেকে আশি সকলেই বলবেন কয়লা এবং ইস্পাত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। তেমনই এই মহকুমা দেবদেবীর জন্য বিখ্যাত। যে দেবদেবীদের অন্যতম চন্ডী দেবী ঘাগর বুড়ি। মহকুমা শহরটির উত্তরে ননিয়া নদীর তীরে এই ঘাগর বুড়ির দেবীর মন্দির রয়েছে। এই মন্দির যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সে সময় আসানসোল মহাকুমা ছিল শুধুই মাঠ, যাকে ঘিরে ছিল আসান গাছের জঙ্গল। তবে এখন আর আসানসোলে হাসান গাছ দেখা যায় না। এই মন্দিরটি ঘিরে রয়েছে নানান অলৌকিক কাহিনী। এখানে নাকি আজও দেবী ঘুরে বেড়ান। রাত ১২ টার পর নাকি এই মন্দিরে পা রাখা যায় না। শুধু তাই নয় দেবীর যা খেতে ইচ্ছে করে তাই রাখা থাকে গর্ভগৃহে। কিভাবে তা সম্ভব হয় কেউই জানেন না! আসুন জেনে নেওয়া যাক এই মন্দির কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিল! কিভাবে ঘাগরবুড়ি দেবী প্রতিষ্ঠিত হন!


 আজ থেকে ৫০০ বছর আগের কথা তখন সেখানে থাকতো হাতেগোনা কয়েকটি বাড়ি দু তিনটি বাড়ি নিয়ে গড়ে উঠেছিল এক একটি ক্ষুদ্র গ্রাম। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামগুলোয় যজমানি করতেন এক গরিব ব্রাহ্মণ।

 তার নাম ছিল কাঙ্গালী চরণ চক্রবর্তী। প্রতিদিন নুনিয়া নদী পার করে ওপারে গ্রামগুলিতে যেতেন পুজো করতে। আবার পায়ে হেঁটে নদী পেরিয়ে ফিরে আসতেন বাড়িতে এভাবে বহু কষ্টের দিন কাটাতেন তিনি কিন্তু সেভাবে তো সংসার চলে না। শীতের দিনে দিনটি ছিল পয়লা মাঘ সেদিন কোনও পুজো জোটেনি তার কপালে। নুনিয়া নদীর পেরিয়ে এসে ক্ষিদে এবং ক্লান্ত কাঙ্গালী চরণ তখন সে এক গাছ তলায় শুয়ে পড়লেন। তখন সে ক্লান্ত ভাবে ডাকতে রইলেন মা চন্ডিকে। সেই ডাকতে ডাকতে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়েন। আচমকা লাঠি শব্দে তার ঘুম ভাঙ্গে। কাঙ্গালী চরণ দেখতে পান এক ঘাগড়া পড়া এক বুড়ি। তাকে দেখে কালিচরণের চোখ যেন ঝলসে গিয়েছিল। থেমে গেল নুনিয়া নদীরও গর্জন। সেই সময় ঘুমন্ত চোখে কাঙ্গালী চরণ পরিষ্কার শুনতে পায় কেউ যেন তাকে বলছেন তোর আর আজকের থেকে ভিক্ষে করে খেতে হবে না ঘুম ভাঙলে দেখবি কোলে তিনখানা পাথর। সেই তিন খানা পাথর হল মা ঘাগর বুড়ি আমার ডানে হল মা অন্নপূর্ণা আর বাঁদিকে হল পঞ্চান্ন মহাদেব। এখানে আমাদের মন্দির প্রতিষ্ঠা কর আর তোকে কোথাও যেতে হবে না। মা ঘাগরবুড়ির আদেশে মন্দির প্রতিষ্ঠা হয় ১৬২০ সালে। এই পাথরের ডিপি গুলোকেই ফুল ও গয়না দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় আর সেই ১৬২০ সালের পয়লা মাঘে প্রতিবছর মন্দিরের সামনে বসে ঘাগরবুড়ি চন্ডী মাতার মেলা।

কে এই ঘাঘর বুড়ি? কি ভাবে এখানে প্রতিষ্ঠিতা হলেন? ইতিহাস বলছে কাশিপুর মহারাজার রাজ্য সীমানা ছিল আসানসোল পর্য়ন্ত। জমি জমার পুরানো রেকর্ড থেকে দেখা যায় তদনীন্তন কাশীপুর মহারাজের নাম।
প্রমান্য তথ্য থেকে জানা যায় বহু প্রাচীন কাল থেকে অনাচ্ছাদিত মন্দিরে, গাছ তলায় পুজা হয়ে আসছে মা ঘাঘর বুড়ির। ইনি দেবী শ্রীশ্রী চন্ডী। কোন মূর্তি নেই। শুধু তিনটি শীলা। ঘাঘর শব্দের অর্থ হল – ঝাঁজ বাদ্য ও ঘুঙুর। পুরানে দেব-দেবীর বিভিন্ন পুজা পদ্ধতির উল্লেখ আছে- তার মধ্যে নৃত্য গীত-বাদ্য সহকারে বহু দেবীর পূজার প্রচলন ছিল।
মায়ের মন্দির সংলগ্ন এলাকাটি আদিবাসী অধ্যুষিত। অতীতে যে মায়ের পূজা নৃত্য-গীত-বাদ্য সহকারে হত সেবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
ঘাঘর শব্দের আরেকটি অর্থ হল নদী। নুনীয়া নদীর দক্ষিন তীরে মায়ের মন্দির- এমনও হতে পারে- যে এই জন্যই দেবী চন্ডীর এখানে নাম হয়েছিল  ঘাঘর বুড়ি।



No comments:

Post a Comment

Post Top Ad