জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির হানা
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ৩০ জুলাই: সাতসকালে ইডির হানা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটের ব্যবসায়ী বারিক বিশ্বাসের বাড়ি ও তার বাড়ির পাশের একটি রাইস মিলে মঙ্গলবার সাত সকালে হানা দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইডির হানা এর আগেও হয়েছিল তার বাড়িতে। রাজ্যে রেশন দুর্নীতি মামলা ও বাংলাদেশে রেশনের চাল পাচার কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম জড়িয়েছিল এক সময়। রাজ্য পুলিশের তরফে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু প্রভাবশালী তত্ত্বে সব ধামা চাপা পড়ে যায়।
রেশন দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বিচারাধীন অবস্থায় জেলবন্দী রয়েছেন। তাঁর জেলা সভাপতিত্ব থাকাকালীন বারিক বিশ্বাসের ব্যবসার বাড়ন্ত হয়। এক সময় বাম আমলে হাসনাবাদ এলাকার ত্রাস বাবু মাস্টারের ছত্র ছায়ায় চোরাচালান কারী হিসেবেও বারিক বিশ্বাসের যথেষ্ট নাম ছিল পুলিশের খাতায়। ২০১১ সালের পর থেকে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে বারিক বিশ্বাস ও রাজনৈতিক রং বদলায়। তৎকালীন বসিরহাটের সাংসদ কাজী নুরুল ইসলামের খুব কাছে চলে আসেন বারিক বিশ্বাস। সোনা পাচার, গরু পাচার, কয়লা পাচার সহ বহুবিধ ব্যবসায় রাতারাতি ধনী হয়ে ওঠা বারিক বিশ্বাসকে দেখলে রীতিমতো অবাক হতে হয়।
আর্থিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পরে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের চোখের মণি হয়ে ওঠেন বসিরহাটে। এক কথায় সাংসদ হোক আর বিধায়ক, উত্তর ২৪ পরগনার সব তৃণমূল নেতার আনঅফিসিয়ালি স্পন্সর অর্থাৎ গৌরী সেন ছিলেন এই বারিক বিশ্বাস।
২০১৪ সালে সোনা পাচার কাণ্ডে ১০ কেজি সোনা সহ শুল্ক দপ্তরের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন জেল খাটার পর জামিনে মুক্ত হন তিনি। এরপরে প্রত্যক্ষ ভাবে রাজনীতিতে অবতীর্ণ হন। কিন্তু অনেক দৌড় ঝাঁপ করেও পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি হিসেবে ভোটে লড়ার টিকিট পাননি বসিরহাট থেকে। কিন্তু তাঁর দাদা গোলাম বিশ্বাস তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
বর্তমানে বারিক বিশ্বাসের বৌদির অর্থাৎ গোলাম বিশ্বাসের স্ত্রী সবিজা বেগম বসিরহাট থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন। সেক্ষেত্রে দাড়িয়ে গোলাম বিশ্বাসের ভাই কিংবা সবিজা বেগমের দেওর হিসেবে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক সুবিধা ও ক্ষমতা ভোগ করেন বারিক বিশ্বাস।
মঙ্গলবার সকালে বসিরহাটের পাশাপাশি রাজারহাট, নিউটাউন, সল্টলেক, বারাসত ও বিধাননগরে বারিক বিশ্বাসের একাধিক ফ্ল্যাট, আবাসন, কারখানা, অফিস ও সম্পত্তিতে হানা দেয় ইডির আধিকারিকরা। আটক করা হয়েছে বেশ কিছু দামী গাড়ীও।
No comments:
Post a Comment