সালিশি সভায় চার ভাইকে বেধড়ক মার! পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির রড-হাঁসুয়া নিয়ে হামলা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday 19 July 2024

সালিশি সভায় চার ভাইকে বেধড়ক মার! পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির রড-হাঁসুয়া নিয়ে হামলা

 


সালিশি সভায় চার ভাইকে বেধড়ক মার! পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির রড-হাঁসুয়া নিয়ে হামলা



নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৯ জুলাই: সালিশি বসিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক চার ভাইকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল শ্রমিক সরবরহাকারী ঠিকাদার ও তার দলবলের বিরুদ্ধে। ছুরি, হাঁসুয়া, লোহার রড নিয়ে সালিশি সভাতেই হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। সেই সালিশি বসেছিল তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়ির সামনে। পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর নেতৃত্বে সেই সভায় হাজির ছিলেন প্রধানের স্বামী। তার সামনেই ওই মারধরের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের মালিওর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের হরকাবাথান এলাকায়। 


আহত চার ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১২ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে। অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নয় মাস আগে স্থানীয় শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার মণিরুল ইসলামের কাছে ১১ হাজার অগ্রিম নিয়ে মুম্বাইয়ে কাজে যান এলাকারই আকবর আলি। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই আকবর সেই কাজ ছেড়ে অন্য এলাকায় চলে যান। এরপর আকবরের কাছে বকেয়া টাকা আদায় ঘিরে বিবাদ বাঁধে। ঠিকাদার মণিরুল গত সোমবার আকবরের বাড়িতে চড়াও হয়ে ১০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। আকবর এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। 


ওই ঘটনা স্থানীয় ভাবে মিটিয়ে নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার মালিওর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী আব্দুল রহমানের নেতৃত্বে তাঁর বাড়ির সামনে সালিশি ডাকা হয়। সেখানে আকবর ছাড়াও তাঁর তিন ভাই বাবর, জাহাঙ্গীর ও আরও এক ভাই হাজির ছিলেন। অভিযোগ, সেই সালিশিতে প্রধানের স্বামীর সামনেই চার ভাইয়ের ওপরে ঠিকাদার মনিরুল ও তার সঙ্গীরা ছুরি, হাঁসুয়া, লোহার রড নিয়ে চড়াও হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। 


আকবর আলি বলেন, 'আমার কাছে ওরা কিছু টাকা পেত। আমি কাজ নিয়ে মুম্বাই গিয়েছিলাম কিন্তু সেই কাজ শেষ করতে পারিনি। কিছুদিন আগে মনিরুল আমার কাছে এসে বলেছিল ৫ সেকেন্ডের মধ্যে টাকা দাও। দিইনি বলে মারধর করে, মোবাইল কেড়ে নেয়। সেই ঝামেলা মেটাতে সালিশি সভায় গিয়েছিলাম। সভা ডেকেছিলেন প্রধান। সবার কথা শোনা হল। হঠাৎ আমাদের চার ভাইকে মারধর করা হল।'


এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী আব্দুল রহমান বলেন, "টাকা পয়সা নিয়ে গ্রামের মধ্যে গন্ডগোল ছিল মেটানোর জন্য আমার বাড়িতে ডেকেছিলাম। এরপর আর খোঁজ নিইনি। মারধর হয়েছে শুনলাম। থানায় অভিযোগ হয়েছে।"


মণিরুলের কথায়, পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তবে মারধরের কথা স্বীকার করেননি তিনি। তিনি বলেন, অনেক দিনের পাওনা টাকা ছিল। চাইতে গেলে একটু কথাকাটাকাটি হয়। ওই আগে আমার ধরেছিল। এরপর আমারও মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। পাওনা টাকা নিয়ে সভা বসেছিল, ওর সঙ্গে একটু কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়, এতে পা পিছলে পড়ে ব্যথা লাগে। এখন না মারলেও মেরেছি।'


চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, 'এদিন অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ওই ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad