প্ল্যাটফর্মে ছটফটিয়ে মৃত্যু জখম যাত্রীর! দাঁড়িয়ে দেখল রেল পুলিশ, মিলল না এক ফোঁটা জলও
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৩ জুলাই: অমানবিকতার চিত্র রেল স্টেশনে। ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর জখম বৃদ্ধকে দীর্ঘ সময় প্ল্যাটফর্মেই ফেলে রাখল রেল পুলিশ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দূরের কথা, জুটল না এক ফোঁটা জল। ছটফটিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বৃদ্ধ। শনিবার সকালে এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর রেল স্টেশন। মৃত বৃদ্ধের নাম পরিচয় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য এবং ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে অজ্ঞাত পরিচয় ওই বৃদ্ধ ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পড়ে যান এবং রেলের চাকায় হাত-পা কাটা যায়। অভিযোগ, ওই আহত বৃদ্ধকে দীর্ঘক্ষণ প্ল্যাটফর্মে রোদের মধ্যে শুইয়ে রাখে রেল পুলিশ। হাসপাতালে পাঠানো তো দূর, তিনি বারবার জল খেতে চাইলেও অমানবিক রেল পুলিশ জল পর্যন্ত খেতে দেয়নি। এমনকি যাত্রীরা সাহায্য করতে এগিয়ে এলে তাদেরও লাঠি উঁচিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসার অভাবেই ওই বৃদ্ধ হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই ছটফট করতে করতে মারা যান। এখানেই শেষ নয়, সাংবাদিকরা সেখানে গেলে তাদেরও রেল পুলিশের হুমকির মুখে পড়তে হয়। সাংবাদিকদের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এরপরে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত ওই ব্যক্তিকে আগে আনলে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হতো। যাত্রীদের অভিযোগ, রেল পুলিশের গাফিলতির জন্যই বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। এমনকি এই দেহের দায়িত্ব কে নেবে এই নিয়ম দীর্ঘক্ষণ টানাপোড়ন চলে রেল পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মধ্যে।
হরিশ্চন্দ্রপুরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভেন্দু ভক্ত বলেন, ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় নিয়ে এসেছিল জিআরপিএফ। আগে আনলে হয়তো তাঁর চিকিৎসা করা সম্ভব হতো, হয়তো উনি বেঁচেও যেতে পারতেন।'
কিছুদিন ধরেই কখনও ট্রেন দুর্ঘটনা আবার কখনও নির্দিষ্ট স্টেশনে ট্রেন না দাঁড়ানোর ঘটনায় শিরোনামে রয়েছে রেল। আর এদিন এই অমানবিক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাজুড়ে। যদিও ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
No comments:
Post a Comment