'অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজা খটখটানি করে--', বাংলাদেশ নিয়ে বার্তা মমতার
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২১ জুলাই, কলকাতা: কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। চারিদিকে সহিংস বিক্ষোভ। প্রাণহানি হয়েছে শতাধিক মানুষের। এই আবহে বড় বার্তা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার কলকাতায় শহীদ দিবসের সমাবেশ উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের দরজা তাঁদের জন্য সবসময় খোলা।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাবধান করে দেন, বাংলাদেশ নিয়ে কেউ যেন কোনও প্ররোচনায় না যায়। পাশাপাশি তাঁর বার্তা, 'বাংলাদেশীরা আমাদের দরজায় কড়া নাড়লে আমরা তাদের আশ্রয় দেব।' শরণার্থীদের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বাংলার সেইসব বাসিন্দাদের পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিচ্ছি যাদের আত্মীয়স্বজন সহিংসতায় আক্রান্ত বাংলাদেশে আটকা পড়েছেন।'
২১ শে জুলাইয়ে মঞ্চ থেকে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আপনার পরিবার যদি বাংলাদেশে থাকে, কেউ পড়াশোনা করতে গেছে, কেউ চিকিৎসার জন্য এসে ফিরতে পারছে না, যদি কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আমরা সাহায্য করব।”
তিনি বলেন, "আমি বাংলাদেশ নিয়ে কোনও কথা বলতে পারি না। কারণ ওটা একটা আলাদা দেশ। যা বলার ভারত সরকার বলবে। কিন্তু আমি এটুকু বলতে পারি অসহায় মানুষ যদি বাংলার দরজা খটখটানি করে, আমরা তাদের আশ্রয় নিশ্চয়ই দেব। তার কারণ এটা ইউনাইটেড নেশনসের একটা রেজুলেশন আছে। কেউ যদি রিফিউজি হয়ে যায় তাঁকে পার্শ্ববর্তী এলাকা তাঁকে সম্মান জানাবে।"
এ প্রসঙ্গে আসামের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মমতা। তিনি বলেন, “যেমন, আসামে একটা অশান্তি হয়েছিল বোরোদের সাথে। তাঁরা দীর্ঘদিন আলিপুরদুয়ারে ছিলেন। আমিও তাদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।"
পাশাপাশি মমতার সাবধানি বার্তা, "আমি আপনাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আমরা যেন কোনও উসকানিতে না যাই, বাংলাদেশ নিয়ে কোনও উত্তেজনায় না যাই। আমাদের সহমর্মিতা, আমাদের দুঃখ সে যাঁরই রক্ত ঝরুক, তাঁদের জন্য আছে। আমরা দুঃখী। আমরাও খবর রাখছি। ছাত্র-ছাত্রীদের মহান প্রাণ তাজা প্রাণগুলো চলে যাচ্ছে।"
এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মঞ্চে বক্তৃতা করছিলেন, তখন বাংলাদেশ থেকে বড় খবর আসে। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সংরক্ষণ বহালের হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয়। আদেশে বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে ৯৩ শতাংশ সরকারি চাকরিতে নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে।’ বাকি ৭ শতাংশের ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই সিদ্ধান্তকে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিজয় বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একটি বড় অংশ।
No comments:
Post a Comment