'মহিলাদের ছাড় নয় সমান সুযোগ চাই, আইন নয় চিন্তাধারায় বদল হয় সমাজ'- বললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৭ সেপ্টেম্বর:'সমাজ শুধু আইন দিয়ে পরিবর্তন হয় না, এ জন্য জনগণের চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটাতে হবে', এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এসব কথা বলেন। সিজেআই সমাজে মহিলাদের মর্যাদা এবং তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, 'সবচেয়ে বড় কথা হল আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের চিন্তাভাবনা অবশ্যই মহিলাদের স্বাধীনতা ও সমতার ভিত্তিতে জীবনযাপনের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ছাড় দেওয়ার বাইরে যেতে হবে।'
তিনি বলেন, 'কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের কোনও ছাড়ের প্রয়োজন নেই বরং এর থেকে আরও অনেক এগিয়ে তাঁদের সমান অধিকার এবং সমান সুযোগ চাই। তাঁদের নিরাপদ এবং উন্নত কর্মক্ষেত্র চাই।' সিজেআই বলেন, 'নিরাপত্তা, সুযোগের সমতা, সম্মান এবং ক্ষমতায়ন এমন জিনিস নয় যা আলাদাভাবে আলোচনা করা যেতে পারে বরং দেশের প্রতিটি মানুষকে এ বিষয়ে এগিয়ে এসে আলোচনা করতে হবে।'
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'মহিলাদের অধিকার নিয়ে কথা বলা মহিলাদের বিষয় নয়। এই আমাদের সকলের কথা। আমাদের প্রতি সন্ধ্যায় এইরকম গুরুতর কথোপকথনে জড়িত হওয়া উচিৎ।' তিনি বলেন, 'মহিলারা কী করছেন এবং কী ভূমিকা পালন করছেন তা ব্যাখ্যা করার দরকার নেই।' নিউজ এইটটিন-এর একটি অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে সিজেআই বলেন, 'বিশ্বের কোনও জ্ঞান কোনও মহিলার অন্তর্দৃষ্টিকে প্রতিস্থাপন করতে পারে না। মহিলারা অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।'
তিনি বলেন, 'মহিলাদের এখনও নিজেদের প্রমাণ করতে হয়। শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য সংসাধনে তাঁদের প্রবেশাধিকারে নজর রাখা হয়, যেখানে পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি নয়।' ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'আমি নিশ্চিত যে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান, চিন্তাশীল নেতা এবং দেশের নাগরিকরা এই দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যেতে পারবেন না। এটা শুধু মহিলাদের জন্য নয়, আমাদের ব্যবস্থা এবং সামাজিক কাঠামোর সামর্থ্য নিয়ে, যাতে সমাজ আরও ভালো হয়ে উঠতে পারে।' তিনি বলেন, 'শাসন, নীতি ও নেতৃত্বে মহিলাদের সমান অংশগ্রহণ উন্নয়নের ফলাফলকে উন্নত করবে।'
এই উপলক্ষে সিজেআই হংসা মেহতার কথাও উল্লেখ করেছেন, যিনি ভারতে সংবিধান কার্যকর হওয়ার পরে ভারতীয় মহিলাদের অধিকারের সনদ তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেন, হংসা মেহতা একজন নারীবাদী ছিলেন যিনি বিখ্যাত যুক্তি দিয়েছিলেন যে, পুরুষদের উল্লেখ মানবতার প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।' তিনি বলেন, মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মানবাধিকার বলে যে সমস্ত মানুষ স্বাধীন এবং সমান অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। শুধুমাত্র পুরুষরাই এমন নয়, যাঁদের এই বিশেষাধিকার মিলেছে।'
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'প্রত্যেক মহিলাকে তাঁর বিশেষতার জন্য স্বীকার করুন। তিনি বলেন, 'শ্রম কর্মে মহিলাদের অংশগ্রহণ ৩৭ শতাংশ। পাশাপাশি, জিডিপিতে তাদের অবদান ১৮ শতাংশ। আজও আমরা মহিলাদের সেই অংশে পৌঁছাতে পারিনি, যা স্বাধীনতার আগে প্রত্যাশিত ছিল।
No comments:
Post a Comment