জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা!
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১৪ সেপ্টেম্বর, কলকাতা : শনিবার হঠাৎই স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি মা ফ্লাইওভারে পৌঁছলে অনেকের সন্দেহ হয়। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি পৌঁছে যান স্বাস্থ্য ভবনে। একই জায়গায় প্রায় ৭২ ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
মুখ্যমন্ত্রী ধর্না মঞ্চে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" স্লোগান তুলতে থাকেন। শুরু হয় ঠেলাঠেলি। দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী হাতে মাইক ধরে আছেন। তিনি চিকিৎসকদের শান্ত হতে বলেন। কিন্তু পরিস্থিতির আকস্মিকতায় ব্যাপারটা শান্ত হতে সময় লেগে যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি আপনাদের অনুরোধ করতে এসেছি। যদি আমাকে বলতে দেন খুশি হব।' কিন্তু তার পরেও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি শান্ত হতে সময় লাগে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, "শান্ত হন। আমিও ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি। আপনাদের মাইকটা কি ঠিক করা যাবে? আমি যখন এসেছি আমি কাজটা করব।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমাকে পাঁচ মিনিট বলতে দিন। আমার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও আমি ছুটে এসেছি আপনাদের কাছে। আমি আপনাদের আন্দোলনের কুর্নিশ জানাই।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "গতকাল সারারাত ঝড় হয়, তাতে
আপনাদের যেমন কষ্ট হয়েছে, আমারও কষ্ট হয়েছে। আমি ঘুমাতে পারি নি। আজ তেত্রিশ, চৌত্রিশ দিন হয়ে গেছে। আমিও ঘুমাতে পারিনি। কারণ আপনারা যখন রাস্তায় থাকেন, আমাকেও জেগে থাকতে হয়। এই দুর্যোগে আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। আমি কথা দিচ্ছি, আপনারা যদি কাজে ফিরতে চান, আমি আমার অফিসারদের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করব। আমি একা সরকার চালাই না। মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব রয়েছেন। কেউ দোষ করলে ব্যবস্থা নেব।"
তিনি বলেন, "আপনারা আমার ভাই-বোন। আমি যদি আপনাদের ধর্ণা মঞ্চে আসতে পারি তাহলে বাকি কাজগুলোও করতে পারব। আমাকে কটা সময় দিন, আমি একদিনে করতে পারব না। দুর্নীতির কোনও অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তদন্ত করে শাস্তি দেব। তাই কাজে ফিরে যান। আমি এটা জোর করতে চাই না। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দিদি হয়ে আপনাদের কাছে আসছি। আমি আপনাদের আন্দোলনের সমব্যথী, সমসাথী। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এসব কথা বলেন, তখন জুনিয়র চিকিৎসকরাও শান্ত হয়ে শোনেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থারও উন্নতি করেছেন। তিনি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে রাজনৈতিক নেতাকে সরিয়ে ওই পদে একজন অধ্যক্ষ বা সুপারদের সেই পদে বসানোর আশ্বাস দেন।
No comments:
Post a Comment