গ্রেফতার অপহরণকারী তৃণমূল কাউন্সিলর - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, 20 September 2024

গ্রেফতার অপহরণকারী তৃণমূল কাউন্সিলর

 


গ্রেফতার অপহরণকারী তৃণমূল কাউন্সিলর 



নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ২০ সেপ্টেম্বর: ত্রিপুরার ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ নেওয়া মামলায় গ্রেফতার হলেন বারাসত পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর মিলন সর্দার। সোনার দোকানের কর্মচারী থেকে কাউন্সিলর হয়ে দুই দফায় কোটিপতি হয়েছেন তিনি। বারাসত থেকে বাদুড়িয়া থানা এলাকায় একাধিক জমি কিনেছেন তৃণমূলের ওই কাউন্সিলর। 


তৃণমূল কাউন্সিলর হিসেবে মিলন রাজ্যের প্রাচীনতম পুরসভার ইতিহাসে এবং অপহরণ মামলায় রাজ্যে গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি। ব্যবসায়ী অপহরণ মামলায় গ্রেফতার হওয়া মিলনের আগে এই মামলায় সাত জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তাদের গ্রেফতার করে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ পাওয়ার পর মিলনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। বৃহস্পতিবার রাতে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূল কাউন্সিলর মিলনকে বহিস্কার করেছে তৃণমূল। 


সিআইডি সূত্রের খবর, সোদপুরের আবাসনের পার্কিং লট থেকে ত্রিপুরার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বারাসতের একটি ফ্ল্যাটে বসে। সেখানে উপস্থিত ছিল ওই ঘটনার মূল অভিযুক্তও। সিআইডি সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্তও ত্রিপুরার বাসিন্দা। তার কাছ থেকে তথ্য নিয়েই ত্রিপুরার ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণের ছক কষেছিল গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা। এমনকি, অপহরণের পরে ওই ব্যক্তিকে যেখানে রাখা হয়েছিল, সেই ভাড়া বাড়িও ঠিক করে দিয়েছিল মূল অভিযুক্ত। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক সে। তবে, অপহরণের ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। 


গ্রেফতার করা হয়েছে গাড়ির চালককেও। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ওই অপহরণ ঘটনায় বারাসত পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিলন সর্দারের ভূমিকা ছিল। সেসব তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ এবং ধৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিলনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 


পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিপুরার ওইব্যবসায়ী সোদপুরের একটি আবাসনে এক পরিচিতের বাড়িতে এসেছিলেন। অভিযোগ, তিন সপ্তাহ আগে এক দিন তিনি যখন আবাসনের নীচে পার্কিং লটে আসেন, তখনই কয়েক জন অস্ত্র দেখিয়ে সেখান থেকে তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এর পরে তাঁকে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয় বারাসতের একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে। 


তদন্তকারী এক অফিসার জানান, ওই ব্যবসায়ীর জন্য মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই সিআইডি-র গোয়েন্দাদের কাছে গোপন সূত্রে খবর চলে আসে ওই অপহরণের। এর পরেই তদন্তে নেমে অপহরণের এক দিনের মাথায় সিআইডি-র স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের গোয়েন্দাদের একটি দল বারাসতের ওই আবাসনে হানা দিয়ে ত্রিপুরার ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয় ছ'জনকে, যারা সকলেই ওই অপহরণ-চক্রে যুক্ত। পরে গ্রেফতার করা হয় গাড়ির চালককে। বর্তমানে এই সাত জনই পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। এদের মধ্যে এক জন প্রাক্তন পুলিশকর্মী।


তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ত্রিপুরার বাসিন্দা এক জন ওই অপহরণের মূল চক্রী। তার কাছ থেকে খবর পেয়েই উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকজনকে নিয়ে অপহরণকারীর দল তৈরি করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত সাত জন গ্রেফতার হলেও, যার ফ্ল্যাটে ব্যবসায়ীকে আটকে রাখা হয়েছিল, সেই ব্যক্তি-সহ আরও কয়েক জন পলাতক। উল্লেখ্য, এর আগেও ওই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে সিআইডি-র তদন্তকারীরা জেনেছেন। দুই দফায় নয় কোটি টাকা নিয়েছিল তারা। সেই ঘটনার সঙ্গে এবারের অপহরণের যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad