জিপ চালাচ্ছিলেন, কাঁধে মাথা রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ আরএসএস নেতার! জন্মদিনে মোদী-কাহিনী
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৭ সেপ্টেম্বর: আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ৭৪তম জন্মদিন। তিনি ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি স্বাধীনতার পর জন্মগ্রহণ করেন। ভাদনগরের একটি দরিদ্র পরিবারে তাঁর জন্ম। তিনি বহু বছর ধরে আরএসএস-এর হয়ে কাজ করেছেন। এরপর রাজনীতির সিঁড়িতে পা রাখেন এবং কখনও থেমে থাকেননি। তিনি চারবার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। বিশেষ বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি কখনও সংসদের সদস্য ছিলেন না। তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ধৈর্য্যের জন্যও পরিচিত। তিনি দীর্ঘদিন আরএসএস-এ থেকে কাজ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একবার ভাদোদরায় একটি অনুষ্ঠানর আয়োজন করা হয়েছিল। গুরু গোয়ালকারের জন্মদিন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আরএসএস প্রচারক লক্ষ্মণ রাও ইনামদারও এতে অংশ নেন। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদী তাঁকে একটি জিপে স্টেশনে নামিয়ে দিতে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজেই জিপ চালাচ্ছিলেন। এই সময় আরএসএস নেতা প্রয়াত হন। তিনি নরেন্দ্র মোদীর কাঁধে মাথা রেখে শেষ নিঃশ্বাস নেন। এরপরও তিনি জিপ চালিয়ে যান এবং ফিরে আসেন। দ্বিতীয় দিনে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতেতেও তাঁর ধৈর্য্য ও সাহসের কথা স্মরণ করেন সঙঘ কার্মকর্তা গিরীশ ভট্ট।
রিলায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ধিরুভাই আম্বানি ৯০-এর দশকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, নরেন্দ্র মোদী একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগেও তিনি একবার ধীরুভাই আম্বানির বাড়িতে গিয়েছিলেন। কথোপকথনের পর ধীরুভাই বলেন, নরেন্দ্র মোদী একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদীর শৈশব কেটেছে দারিদ্রের মধ্যে। তিনি স্টেশনে চা-ও বিক্রিকরেন। একবার মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেই বলেছিলেন যে, তিনি ছোটবেলায় দুষ্টু ছিলেন। তিনি তেঁতুল দেখিয়ে সানাই বাজানো লোকেদের বিভ্রান্ত করতেন। একবার তিনি জলাশয় থেকে একটি কুমির ধরে এনেছিলেন। মা বোঝানোর পর তিনি সেটিকে আবার ছেড়ে দেন।
নরেন্দ্র মোদীর যখন ৮ বছর বয়স, তখন তিনি আরএসএসের সংস্পর্শে আসেন। ১৭ বছর বয়সে, তিনি আরএসএস-এর একজন পূর্ণ-সময়ের প্রচারক হয়ে যান। জরুরি অবস্থার সময় তিনি আরএসএস নেতাদের সঙ্গে খুব সক্রিয় ছিলেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধী সরকারের বিরুদ্ধে প্রচুর আর্টিকেল লিখতেন। এছাড়া তিনি পত্রিকা বিতরণের দায়িত্বও পালন করেন। জরুরি অবস্থার সময় পুলিশ তাকে খুঁজছিল। এমতাবস্থায় নিজের পরিচয় লুকানোর জন্য তিনি একজন সর্দারের বেশ নিয়েছিলেন। একসময় তিনি সর্দার হয়ে জেলেও গিয়েছিলেন। তাঁকে কেউ চিনতে পারেননি।
১৯৯২ সালের কথা। নরেন্দ্র মোদী অন্যান্য নেতাদের সাথে কাশ্মীরের লাল চকে পৌঁছান এবং সেখানে তেরঙ্গা উত্তোলন করা হয়। ফেরার সময় খানপুরে বৈঠক হয়। যখন মোদী জানতে পারলেন যে, তাঁর মা-ও মঞ্চে থাকবেন, তিনি বলেছিলেন যে, তিনি ভারত মাতার ছেলে হয়ে লাল চকে গিয়েছিলেন। এমন অবস্থায় মাকে মঞ্চে যেন না আনা হয়। এর পরেও তিনি যখন মঞ্চে পৌঁছান তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর মা। এর জন্য বন্ধু অশোকভাইয়ের ওপর খুব রেগে যান তিনি।
নরেন্দ্র মোদীর বাবা ১৯৮৯ সালে প্রয়াত যান। একই দিনে গুজরাটে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। যখন জানা যায়, তাঁর বাবা মারা গেছেন, তখন সবাই ভেবেছিলেন যে, তিনি সভায় যোগ দিতে পারবেন না। কিন্তু দুপুরের পরে বৈঠকে পৌঁছে যান নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। মিটিংটাও দরকার ছিল, তাই এসেছেন।
No comments:
Post a Comment