চন্দ্রিমা বচনেই ভেস্তে গেল বৈঠক? 'ফিরে যেতে বলা হয়েছে', দাবী জুনিয়র চিকিৎসকদের
কলকাতা: বৃহস্পতিবারের ন্যায় শনিবারের ভেস্তে গেল মুখ্যমন্ত্রী-চিকিৎসকদের বৈঠক। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর নিঃশর্ত আলোচনাতেই শেষ পর্যন্ত রাজি ছিলেন কিন্তু তাঁদের সঙ্গে সরকার পক্ষ আর বৈঠক করতে চায়নি, এমনই দাবী জুনিয়র চিকিৎসকরা। অভিযোগ, 'অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, আর সম্ভব নয়', এই মন্তব্য করে তাঁদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁদের ফিরে যেতে বলেছেন।
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্যভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আচমকাই এদিন চিকিৎসকদের ধর্না মঞ্চে উপস্থিত হন তিনি। সেখানেই আলোচনার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়র চিকিৎসকেরাও এরপরে বৈঠকে বসার কথা বলেন। সেই অনুযায়ী এদিন সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কালীঘাটের বাড়িতে ডাকেন বৈঠকের জন্য। কিন্তু সেই বৃহস্পতিবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি। লাইভ স্ট্রিমিং ইস্যুতে থমকে যায় বৈঠক। ঘন্টার পর ঘন্টা মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে অপেক্ষা করেও ভেতরে যাননি জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
এদিন বৈঠকের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা। তাঁরা চিকিৎসকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাইরে এসে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন, হাত জোড় করে অনুরোধ করেন বৃষ্টিতে না ভিজতে। কিন্তু সেইসময় নিজেদের দাবীতে একপ্রকার অনড় ছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। রাজ্য সরকারের তরফেও তাঁদের লাইভ বা ভিডিও রেকর্ডিংয়ের দাবীতে সম্মতি জানানো হয়নি। শেষ পর্যন্ত রাত ৯ টার পরে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ডিজি রাজীব কুমার, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন থেকে বেরিয়ে যান।
এদিকে জুনিয়র চিকিৎসকদের কথায়, তাঁরা সব শর্ত শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছিলেন। লাইভের দাবী বা নিজেদের ভিডিও রেকর্ডিং করার দাবীও করেননি। শুধু চেয়েছিলেন, সরকার যে ভিডিও রেকর্ডিং করত, তার মিনিটস নিয়ে চলে যেতে। কিন্তু তখন আর তাঁদের বৈঠক করতে দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা।
তাঁদের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী নিজে বাইরে এসে অনুরোধ করায় তাঁরা বৈঠকে আগ্ৰহ দেখান। মুখ্যমন্ত্রীর যাতে অসম্মান না হয় সেজন্য তাঁরা নিজেদের দাবী থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁদের বলেন, 'আমরা দু-তিন ঘন্টা অপেক্ষা করেছি। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, আর বৈঠক সম্ভব নয়। অন্য দিন এসো।' অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে থেকে জুনিয়র চিকিৎসকেরা বেরিয়ে যান। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় একপ্রকার কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা। চিকিৎসকেরা জানান, তাঁরা এই ঘটনায় খুবই হতাশ।
No comments:
Post a Comment