'কুমন্তব্য নয়, প্রতিবাদ করার অধিকার সবার'- কড়া বার্তা অভিষেকের
কলকাতা: আন্দোলনরত চিকিৎসকের নিয়ে কয়েক দিন ধরে একের পর এক মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসক দলের। এই আবহে এবারে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার স্পষ্ট কথা, সকলের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী তথা সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে কোনও কুমন্তব্য নয়।
সোমবার রাতের দিকে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল সাংসদ লেখেন, "জনপ্রতিনিধিদের আরও নম্র এবং সহানুভূতিশীল হতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের সকল সদস্যদের কাছে অনুরোধ, স্বাস্থ্যকর্মী তথা সুশীল সমাজের কারও প্রতি কোনও কুমন্তব্য করবেন না। প্রত্যেকেরই প্রতিবাদ করার এবং নিজেকে প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে- এটাই পশ্চিমবঙ্গকে অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে আলাদা করে। আমরা বুলডোজার মডেল এবং রাজনীতির নিপীড়ন কৌশলের বিরুদ্ধে আন্তরিকভাবে লড়াই করেছি।"
তিনি লেখেন, "এই ধরনের নৃশংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে গঠনমূলক পদক্ষেপ করার এখনই সময়। বাংলাকে অবশ্যই এই লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে। যতক্ষণ না অপরাধীদের শাস্তি হয় এবং রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার ধর্ষণ-বিরোধী আইন আনে, ততক্ষণ আমাদের এক হয়ে লড়াই করে যেতে হবে।"
উল্লেখ্য, গত প্রতি বাদীদের কুলির একাধিক নেতা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক সহ, অশোকনগরের তৃণমূল নেতা অতীশ সরকারও। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রথম দিন (ঘটনার পর দিন) থেকেই আন্দোলন, কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। হাসপাতালের আউটডোরজ কাজে এখনও যোগ দেননি তাঁরা। সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের কাজে ফেরার কথা বলেছেন। কিন্তু দাবী পূরণ না হলে নিজেদের অবস্থানে অনড় তাঁরা। এই আবহে কাঞ্চনের প্রশ্ন, "অনেক সরকারি কর্মচারী কর্মবিরতিতে রয়েছেন, তারা সরকারের থেকে বেতন নিচ্ছেন তো নাকি? বোনাস নেবেন তো না সেটা প্রত্যাহার করবেন?' তাঁর এই মন্তব্যে নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র।
অপরদিকে, অশোকনগরের কচুয়া মোড় এলাকায় আরজি কর কাণ্ডে তৃণমূলের প্রতিবাদে সভায় অতীশ সরকারকে বলতে শোনা যায়, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে নিয়ে যারা সব সময় কুরুচিকর মন্তব্য করছেন তাদের বাড়ির মা-বোনেদের ছবি বিকৃত করে বাড়ির দরজায় টাঙিয়ে আসব।" তাঁর এই বেফাঁস মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। অতীশীকে দলের তরফে সাসপেন্ড করা হয়েছে এক বছরের জন্য।
এদিকে দলের নেতা-বিধায়কদের এহেন মন্তব্যে চরম অস্বস্তিতে পড়ে শাসক শিবির। এই আবহে তাই দলের নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
No comments:
Post a Comment