"আমার সঙ্গে যত খুশি রাজনৈতিক লড়াই করুন, কিন্তু মানুষ মারবেন না", বানভাসি দশা নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা মমতার
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৩ সেপ্টেম্বর, কলকাতা : সোমবার বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করেছেন। বন্যা পরিস্থিতির মূল্যায়ন করতে পূর্ব বর্ধমানে একটি প্রশাসনিক পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি আরও বলেন, "বাংলা ডুবে যাচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের লোকেরা কিছুই করছে না।"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি দল জলশক্তি মন্ত্রক ও জ্বালানি মন্ত্রকের কাছে গিয়েছে। কিন্তু এই লোকেরা কিছুই করছে না এবং বাংলা ডুবে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'আপনারা আমাদের সাথে যত খুশি রাজনৈতিক লড়াই করতে পারেন। কিন্তু এভাবে জল ছেড়ে দিয়ে আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষের প্রাণ নিচ্ছেন।'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে, "ডিভিসি কোনও কাজ করে না, ড্রেজিংয়ের কাজ করে না।কৃষকদের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।" তিনি বলেন, 'আমরা কৃষকদের সঙ্গে আছি, আজ পর্যালোচনা সভা হয়েছে। ফসল বিমা প্রকল্পের আওতায় সরকার কৃষকদের পুরো টাকা দেবে। আমরা গ্রামীণ রাস্তাঘাট সার্ভে করতে বলেছি।'
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বন্যা দুর্গত এলাকায় তাঁর সফরের কথা ট্যুইটারে পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি বন্যাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না বলে ম্যান মেড বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন- 'আমি এলাকায় ম্যান মেড বন্যা দুর্গতদের সাহায্যের জন্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছি। আমি তাদের সুস্থতার জন্য আমার উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং জনগণকে আমার অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছি।'
পাশাপাশি তিনি বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমি সব সরকারি আধিকারিককে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করুন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের দুর্ভোগ কমাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিন।' এর একদিন আগে প্রধানমন্ত্রীকে বন্যা নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা এটি দ্বিতীয় চিঠি। চিঠিতে, তিনি অভিযোগ করেছেন যে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) তার সরকারের সাথে পরামর্শ না করেই তার জলাধার থেকে জল ছেড়ে দিয়েছে, যার ফলে রাজ্যের অনেক জেলা ডুবে গেছে। তিনি লিখেছেন, 'কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রীর দাবী যে দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটির সম্মতি ও সহযোগিতায় ডিভিসি-র বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়া হয়েছিল, যার মধ্যে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনাও রয়েছে, আমি সম্মানের সাথে প্রত্যাখ্যান করছি।'
তিনি অভিযোগ করেন, 'ভারত সরকারের জলশক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ কেন্দ্রীয় জল কমিশনের প্রতিনিধিরা কোনও সম্মতি ছাড়াই একতরফাভাবে জল নিয়ে থাকেন বলে দাবী করেন। রাজ্য সরকারের মতামতকে সম্মান করা হয় না।'
No comments:
Post a Comment