প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,৩ অক্টোবর: আজকের ব্যস্ত জীবনে কাজের চাপে মানুষ দুপুরের খাবার বা সকালের খাবার বাদ দিতে শুরু করেছে।দিনে তিনটি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন,যাতে আমরা সুস্থ থাকতে পারি।কিন্তু এই অভ্যাস চালিয়ে গেলে তা স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।আসুন জেনে নেই দুপুরের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার অসুবিধাগুলো কী এবং কীভাবে এই অভ্যাস এড়ানো যায়।
কোলেস্টেরলের ভারসাম্যহীনতা -
আমরা যখন কাজ করি তখন আমাদের মস্তিষ্ক খুব সক্রিয় থাকে।কিন্তু আপনি যদি খাবার বাদ দেন,তাহলে তা আপনার হার্টের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।দুপুরের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরে আপনি ক্ষুধার্ত বোধ করতে পারেন,যা আপনাকে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার দিকে নিয়ে যেতে পারে।এটি শুধু কোলেস্টেরল এবং চর্বিই বাড়ায় না,আপনার শরীরেরও ক্ষতি করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় -
দুপুরের খাবার এড়িয়ে গেলে রক্তচাপের মাত্রায় ওঠানামা হতে পারে,যা হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।গবেষণা অনুসারে,যারা সকালের খাবার খান না তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮৭% বৃদ্ধি পায়।এই অবস্থা কর্মক্ষেত্রে রক্তচাপের ভারসাম্যহীনতাও ঘটায়।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় -
না খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।এই অবস্থা ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়াতে পারে,যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।অতএব,নিয়মিত খাওয়া শুধুমাত্র ডায়াবেটিসের উপর নয়,হার্টের সমস্যা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা -
দুপুরের খাবার এবং প্রাতঃরাশ এড়িয়ে চললে শরীরের চর্বি বৃদ্ধি,দুর্বল বিপাক এবং হজমের সমস্যা হতে পারে।এছাড়া প্যাকেটজাত খাবার খেলে শরীরে পুষ্টি পাওয়া যায় না এবং স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
কিভাবে এই অভ্যাস এড়ানো যায়?
একটি স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ প্রস্তুত করুন -
আপনার ডেস্কে সবসময় কিছু স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স,যেমন- মাখানা, শুকনো ফল,রাগি চিপস বা ফল রাখুন।এই স্ন্যাক্সগুলো শুধু পুষ্টিকরই নয়,কাজের সময় খেতেও সুবিধাজনক।যখনই আপনি ক্ষুধার্ত বোধ করবেন,এই স্বাস্থ্যকর জিনিসগুলি খান যাতে আপনি জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকতে পারেন এবং আপনার শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে পারেন।এইভাবে আপনি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারেন এবং কাজের সময় মনোনিবেশ করতে পারেন।
স্ট্রাকচার্ড লাঞ্চ ব্রেক -
আপনার কাজের পরিকল্পনা এমনভাবে করুন যাতে আপনি নির্দিষ্ট সময়ে লাঞ্চ ব্রেক পেতে পারেন।এটিকে আপনার দৈনন্দিন রুটিনের একটি অংশ করুন,যাতে আপনি আপনার খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখতে পারেন।নিয়মিত মধ্যাহ্নভোজনের বিরতি শুধুমাত্র আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখবে না বরং আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করবে,আপনাকে কাজের প্রতি আরও মনোযোগী করে তুলবে।এইভাবে আপনি আপনার কাজের পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিতেও সক্ষম হবেন।
জল পানের অভ্যাস করুন -
পর্যাপ্ত জল পান করাও গুরুত্বপূর্ণ।কারণ এটি আপনার বিপাক বাড়াতে এবং শরীরে হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত জল পান করা আপনার শক্তির মাত্রা বাড়ায় এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতেও সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে,আপনাকে অপ্রয়োজনীয় স্ন্যাক্স এড়াতে দেয়।অতএব,আপনার কর্মক্ষেত্রে সর্বদা একটি জলের বোতল রাখুন এবং সারা দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করার অভ্যাস করুন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান -
নিয়মিত আপনার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান এবং একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।এটি নিশ্চিত করবে যে আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং সময়মতো সম্ভাব্য সমস্যাগুলি শনাক্ত করবেন।নিয়মিত চেক-আপ আপনাকে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সতর্ক থাকতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সক্ষম করবে।এইভাবে আপনি কেবল আপনার শারীরিক অবস্থার যত্ন নেবেন না,মানসিক স্বাস্থ্যকেও অগ্রাধিকার দেবেন।
কাজের সময় ছোট বিরতি নিন -
কাজ করার সময় সংক্ষিপ্ত বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।কারণ এটি আপনাকে কেবল মনোযোগী রাখবে না,আপনাকে খাওয়ার সময়ও দেবে।এই ছোট বিরতিগুলি আপনাকে মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেবে এবং আপনার উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।বিরতির সময় হালকা স্ট্রেচিং বা হাঁটাও আপনার শক্তির মাত্রা বজায় রাখবে,আপনাকে সতেজভাবে কাজে মনোনিবেশ করতে দেবে।এই অভ্যাসটি অবলম্বন করে আপনি আপনার স্বাস্থ্য এবং দক্ষতা উভয়ই উন্নত করতে পারেন।
কাজের পাশাপাশি খাওয়াটাও জরুরি।দুপুরের খাবার এড়িয়ে যাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আপনার দৈনন্দিন রুটিনে সবসময় খাবারকে প্রাধান্য দিন এবং সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।মনে রাখবেন,একটি সুস্থ শরীরে একটি সুস্থ মন থাকে।
No comments:
Post a Comment