প্রদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা, ৪ অক্টোবর: বিস্কুট খেতে ছোটো বড় সকলেই ভালোবাসে। সকালে প্রাতরাসে ও বিকেলে চায়ের সঙ্গে বিস্কুট না হলে অনেকেরই চলেনা। অনেক দেশেই বিস্কুটকে বলা হয় কুকিজ। নাম যাই হোক বিস্কুট পছন্দের তালিকায় আছে সকলেরই।
তবে প্রথম কখন, কোথায় বিস্কুট খাওয়া শুরু হয়েছিল জানেন কি? বিস্কুট মূলত ময়দা দিয়ে বিভিন্ন আকারে বেক করা হয়। সাধারণত এগুলো চিনি, চকোলেট, জাম, আদা বা দারুচিনির স্বাদ দিয়ে বানানো হয়। ল্যাটিন শব্দ বিস ও ককটাস থেকে বিস্কুট শব্দটির আগমন ঘটেছে। বিস শব্দের অর্থ দুইবার আর ককটাস শব্দের অর্থ রান্না করা বা বেকড। প্রাথমিকভাবে দুই ধাপে বেক করার মাধ্যমে বিস্কুট বানানো হতো। এখন অবশ্য একবারেই বিস্কুট বানানো হয়।
এই শুকনো খাবারটি আসলে আবিষ্কার হয়েছিল সময়ের প্রয়োজনেই। প্রাচীনকালে এর উদ্ভব। তখন রোমান, গ্রিক ও মিশরীয় সাম্রাজ্যের বণিক এবং সামরিক কর্মীদের দীর্ঘ সময় সমুদ্রে থাকতে হতো। তাই তাদের এমন একটি খাবারের প্রয়োজন ছিল, যা পুরো ভ্রমণে প্রয়োজনীয় ক্যালোরির যোগান দেবে। কারণ তাজা খাবার খুব তাড়াতাড়ি পচে যায় বলে, তাই তাজা খাবার দিয়ে তা সম্ভব ছিল না। তখন ময়দা দিয়ে কম আঁচে রান্না করা রুটি তাদের প্রধান খাবার হয়ে ওঠে। সেই রুটি থেকে ধীরে ধীরে বিস্কুটের উদ্ভাবন হয়। মধ্যযুগে সমুদ্রে বিস্কুট খুব জনপ্রিয় ছিল।
সপ্তম শতাব্দীর আগে বিস্কুটকে মিষ্টি খাবার হিসেবে খাওয়ার ধারণার প্রচলন হয়নি। পরে পারস্যরা বিস্কুট নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করে। তারা ময়দার সঙ্গে ডিম, মাখন ও ক্রিম অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করে। এরপর তারা একসঙ্গে ফল ও মধুর মতো মিষ্টি জিনিস ব্যবহার করে প্রথম কুকিজ তৈরি করে।
হান্টলে এন্ড পালমার্স- এর মত কোম্পানি তখন বৃটেন থেকে ভারতে বিস্কুট আমদানি করতো। যদিও বিস্কুটের বাজার ছিল সীমাবদ্ধ। বিস্কুট তখন শ্রমিক শ্রেণীর নাগালের বাইরে থাকা অভিজাত খাবার হিসেবে পরিচিত ছিল। আর অন্যদিকে বর্ণপ্রথায় বিশ্বাসী হিন্দুদের জন্য বিস্কুট ছিল নিষিদ্ধ।
এখন দেশীয় অনেক কোম্পানি নানা স্বাদের ও গন্ধের মিশেলে বিস্কুট তৈরি করছে। যা রসনা মেটাচ্ছে বিস্কুটপ্রেমীদের। ২৯ শে মে বিস্কুট দিবস। যুক্তরাজ্যের জাতীয় দিবস এটি। যারা বিস্কুট খেতে ভালোবাসেন তারা ওই দিনটি নানাভাবে উদযাপন করেন।
No comments:
Post a Comment