প্রদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা, ২ অক্টোবর: করোনা মহামারী আমাদের জীবনটাই নানাভাবে বদলে দিয়েছে। বদলে গেছে খাওয়া দাওয়ার অভ্যাস। বদলে গেছে কাজের ধরন। বলদে গেছে বিনোদনের মাধ্যম।
এসব বদল যেমন শরীরের উপর প্রভাব ফেলেছে, তেমনই প্রভাব ফেলেছে মনের উপরও। বিশেষ করে কাজের ধরনের বদল মনের উপর বিরাট ভাবে প্রভাব ফেলেছে বলে জানাচ্ছেন মনোবিদরা।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগ ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে এক সমীক্ষা শুরু করেছিল।
করোনার সময় থেকেই কাজের ধরন, পড়াশোনা ধরন বদলে যেতে শুরু করে। বহু অফিস, কর্মক্ষেত্রই অনলাইন নির্ভর হয়ে যায়। তেমনিভাবে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনাও শুরু হয় অনলাইনে। এর ফলে বহু মানুষের বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় কমে আসে। বেড়ে যায় বসে থাকার সময়। আর এটাই মন খারাপ হওয়ার বড় কারণ বলে নিজেদের সমীক্ষায় বলেছেন মনোবিদরা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, বসে থাকার বিষয়টা নিয়ে আমরা সেভাবে মাথা ঘামাই না। আমাদের কখনোই মনে হয় না যে, এর ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হচ্ছে। আমরা সবসময় মনে করি যে, এটা একটা স্বাভাবিক আচরণের মধ্যেই পড়ে। অথচ এটাই কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকারক।
সমীক্ষার সময় আমেরিকার তিন হাজার মানুষকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়ার বেশ কয়েকজন মানুষের ওপরও সমীক্ষা চালানো হয়। এতে দেখা গেছে যাদেরই বসে থাকার সময় বেড়ে গেছে তাদের প্রত্যেকের মধ্যে অবসাদের প্রবণতা বেড়েছে। শুধু তাই নয় তাদের মধ্যে অনেকেই উদ্বেগ বা অ্যাংজাইটির সমস্যাতেও ভুগছেন।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে বাড়ি থেকে কাজের ফলে অনেকেরই অফিসে যাতায়াতের সময় বেঁচে যাচ্ছে। আগে এই সময়টা হাঁটাহাঁটি করে, রাস্তায় বেরিয়ে কেটে যেত। এখন সেই সময়টাই তারা কাটাচ্ছেন ঘরে বসে। এর ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের তীব্র অবনতি হচ্ছে।
ব্যায়াম বা যোগাসন মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। যারা সেগুলো করেন না তারা সবাই যে অসুস্থ তা কিন্তু নয়। কিন্তু শুধু বসে থাকার ফলে যে মানুষের স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ হচ্ছে তা প্রমাণিত নতুন গবেষণায়।
এই পরিস্থিতি দূর করতে দিনের নির্দিষ্ট সময় কিছুটা হাঁটাহাঁটি এবং অন্যদের সঙ্গে কথা বলার অভ্যাস তৈরি করতে বলেছেন মনোবিদরা।
No comments:
Post a Comment