নয়াদিল্লি, ০৫ অক্টোবর: নয় বছর আগে পাঠানকোট সেনা চাউনি এবং উড়ি হামলার পর বন্ধ হয় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সফর। আগামী ১৫ তারিখ ইসলামাবাদে দুদিনের এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। যদিও পাকিস্তানে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বা বিদেশ মন্ত্রীর সঙ্গে বিপক্ষে পাঁচশো বৈঠকে বসার কোনও পরিকল্পনা নেই জয়শঙ্করের। নয় বছর পর বিশেষজ্ঞদের দাবী ইসলামাবাদে ভারতের বিদেশ মন্ত্রীর সফর ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক প্রশ্ন একটি বড় ঘটনা ঘটতে চলেছে।
নয় বছর আগে শেষবারের মতো কোনো ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রী হিসেবে সুষমা স্বরাজ ইসলামাবাদের মাটিতে পা রেখেছিলেন। পরে ২০১৬ সালের সার্কভুক্ত দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বইঠক হয়েছিল পাকিস্তানে।সেখানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিষয়টি এমন নয় যে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে এমন কোন লক্ষণীয় পরিবর্তণ এসেছে যে কারণে জয় শংকরকে পাঠানো হচ্ছে। উল্টে মৌলবাদী ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েককে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছে দু'দেশের সম্পর্ক। ২০১৬ সালে নভেম্বরে ইউএপিএ সহ ফৌজদারী দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল এনআইএ। জাকির নায়েককে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়ার সরকারের কাছে লাগাতার আবেদন চালিয়ে যাচ্ছে নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি জাকির পাকিস্থানে গিয়েছেন এবং তাকে বিপুল অভ্যর্থনা জানিয়েছেন সে দেশের সরকার। এই প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেন, "ভারতের আইন কানুন থেকে পালানো একজন ব্যক্তিকে যেভাবে পাকিস্তান স্বাগত জানিয়েছে বুকে জড়িয়ে ধরেছে তা হতাশজনক এবং নিন্দনীয় বটেই তবে এটাও বলব পাকিস্তানের কাছ থেকে এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত নয়।"
সম্প্রতি পাকিস্তানে ভারতর শেষ হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া জানিয়েছিলেন, "গত বছর গোয়ায় এস সি ও সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ভারত। পাকিস্তান তাদের তৎকালীন বিদেশ মন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টোকে গোয়ায় পাঠিয়েছিল। ভারত সেই সৌজন্যের প্রত্যুত্তর দিতে পারে। দ্বিপাক্ষিক বল পাকিস্তানের কোর্টে ঠেলে দিয়ে ভারতের সুযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক প্রতিশ্রুতি গুলো পূরণ করার।"
ইসলামাবাদের ভারত বিরোধিতার অবস্থানের যে নতুন করে কোনও বদল ঘটেনি তা একপ্রকার স্বীকার করেছে সাউথ ব্লক। তবুও বিদেশ মন্ত্রকের কোন বিভাগীয় সচিবকে না পাঠিয়ে খোদ বিদেশ মন্ত্রীকে কেন পাকিস্তানে পাঠানো হচ্ছে সে ব্যাখ্যায় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, শুধুমাত্র পাকিস্তানকে এড়ানোর জন্য রাশিয়া চীন সহ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ ইউরেশীয় রাষ্ট্রের সঙ্গে সংযোগ ছিন্ন করা উচিত হবে না বলে ভেবেছে দিল্লি। বর্তমান রণকৌশলগত পরিস্থিতিতে অবশ্যই জয় শংকরের এসসিও সম্মেলনে হাজির থাকা উচিৎ।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর নিজে জানিয়েছেন, ভারত নিষ্ক্রিয় থাকবে না পাকিস্তানের তরফ থেকে আশা ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় পদক্ষেপেরই হিসেব অনুযায়ী জবাব দেবে।
No comments:
Post a Comment