প্রদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা, ৫ অক্টোবর: অনেকেই পোষা প্রাণীর মধ্যে ঈর্ষা ভাব দেখতে পান। বাড়িতে কোনও নতুন সদস্য জন্মালে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে পোষা প্রাণীটি। তাহলে কি মানুষের মতো প্রাণীজগতেও ঈর্ষা অনুভূতি কাজ করে?
প্রাণীদের মনোজগৎ সম্পর্কে জানা সহজ কাজ নয়। বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা করে চলেছেন। তারা জানান ঈর্ষা একটি আদিম অনুভূতি। মানুষের পাশাপাশি অন্ন প্রাণীরাও ঈর্ষা অনুভব করে।
তবে অনেকে ঈর্ষাকে হিংসার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। আসলে ঈর্ষা ও হিংসা আলাদা দুটি অনুভূতি। হিংসার সঙ্গে মূলত দুটি পক্ষ জড়িত। একপক্ষের সাফল্য বা সম্পদের প্রতি হিংসা জন্মাতে পারে অপরপক্ষের। তবে ঈর্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই তৃতীয় পক্ষের প্রভাব থাকতে পারে। এই তৃতীয় পক্ষের আগমন প্রথম দুই পক্ষের সম্পর্কের বিঘ্ন ঘটায়।
সাধারণত প্রেম ভালোবাসার ক্ষেত্রে ঈর্ষা শব্দটা খুব বেশি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, প্রেম-ভালোবাসা ছাড়াও পরিবারের সদস্য, বন্ধু, সহ কর্মীদের মধ্যেও ঈর্ষা জন্মাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, একটা ছয় বছরের বাচ্চার মনে ঈর্ষা জন্মায়, যখন সে দেখে তার মা অন্য বাচ্চাদের প্রতি বেশি মমতা দেখাচ্ছে।
মানুষ বা কোনও প্রাণীর মধ্যে ঈর্ষা জন্মানোর প্রথম শর্ত, তাকে অন্য কারোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা থাকতে হবে। এরপর তাকে ওই সম্পর্কের সম্ভাব্য হুমকিগুলো চিহ্নিত করতে জানতে হবে।
গবেষকরা জানায়, পোষা কুকুরের সামনে মালিক কুকুরের মতো দেখতে একটা পুতুলের সঙ্গে ভাব বিনিময় করলে দেখা যায়, ৭৫% কুকুরই মালিকের সঙ্গে ওই পুতুলের সম্পর্ক মেনে নিতে পারছে না। অনেকে আবার পুতুল টিকে আক্রমণ করেও বসছে।
তারা আরও বলেন, মূলত দুটি কারণে কিছু কুকুর ঈর্ষা দেখায় না। এক, তারা বুঝে গেছে এটা কেবলই একটা পুতুল। দুই, মাালিকের সঙ্গে তারা ভালো সম্পর্ক তৈরি করে উঠতে পারেনি।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ঈর্ষা একটি আদিম অনুভূতি। শুধু মানুষই নয়, পশু পাখিরাও ঈর্ষা করতে জানে। আর বাড়ির পোষা প্রাণীরা হামেশাই মালিকের পছন্দের বস্তু বা ব্যক্তিদের ঈর্ষা করে।
No comments:
Post a Comment