বিহারের পরিযায়ী শ্রমিককে গণপিটুনি কাণ্ডে গ্ৰেফতার ১ - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, 29 October 2024

বিহারের পরিযায়ী শ্রমিককে গণপিটুনি কাণ্ডে গ্ৰেফতার ১


নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২৯ অক্টোবর: বাংলায় কাজ করতে এসে আক্রান্ত বিহারের পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁকে গণপিটুনি দিয়ে খুনের চেষ্টা ও তাঁর স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনায় রাতভর চিরুনি তল্লাশি পুলিশের। গ্রেফতার অন্যতম এক অভিযুক্ত, বাকিদের খোঁজে চলছে অভিযান। 


মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে বিহারের পরিযায়ী শ্রমিককে গণপিটুনি ও স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনার অভিযোগ পাওয়ার পরেই তৎপর পুলিশ। আইসি সহ অন্যান্য অফিসারদের নেতৃত্বে রাতভর চলল তল্লাশি। এলাকা জুড়ে চিরুনি তল্লাশিতে গ্রেফতার অন্যতম এক অভিযুক্ত। ধৃতের নাম বাটুল আলি। বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের বারদুয়ারি এলাকায়।ধৃতকে এদিন চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। বাকিরা এখনও অধরা। তাঁদের ধরতে চলছে পুলিশের তল্লাশি অভিযান। 


প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে মাখনার ফড়িতে লেনদেন নিয়ে বিবাদের জেরে বিহারের এক পরিযায়ী শ্রমিককে গণপিটুনি দিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে একদল মাখনা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এমনকি তাঁর স্ত্রীকেও বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় তোলপাড় জেলা সহ রাজ্য। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ, জেলা তৃণমূল সভাপতির উস্কানি মূলক বক্তব্যের পর এই ধরনের ঘটনা ঘটল। তৃণমূল বাংলায় বাঙালি-অবাঙালি বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। যদিও বিজেপির এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল। 


হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত সিংপাড়ার এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। বিহারের দারভাঙ্গা জেলার বাসিন্দা শ্রীচন্দ্র সাহানি হরিশ্চন্দ্রপুরে মাখনার ফড়িতে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাখনা ব্যবসায়ীদের ১০ জনের একটি দল ধারদেনার বিষয় নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিককে আক্রমণ করেন। যাদের মধ্যে ছিলেন বাটুল, রহমান, রবিউল, সাবির। ওই মাখনা ফড়ির মালিকের অভিযোগ, লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে বলপূর্বক তাঁকে এবং তার স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারপর মধ্য রাস্তায় গণপিটুনি দিয়ে খুনের চেষ্টা। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন ওই শ্রমিক। (যে ভিডিও সামনে এসেছে)। মাখনা জমির মালিকের আরও অভিযোগ, ওই পরিযায়ী শ্রমিকের স্ত্রীকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। প্রকাশ্য রাস্তায় বিবস্ত্র করে মারা হয়েছে। 


এদিকে, খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। যদিও ততক্ষণে অভিযুক্তরা পলাতক। আক্রান্ত শ্রমিককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় পরবর্তীতে ওই শ্রমিককে বিহারের পূর্ণিয়াতে রেফার করা হয়েছে। 


প্রসঙ্গত, ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু নিয়ে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। কিন্তু বাংলাতে এই ঘটনা ঘটার পর ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কিছুদিন আগেই হরিশ্চন্দ্রপুরের লক্ষণপুরের পরিযায়ী শ্রমিক মতি আলীর রাজস্থানের মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলনে নেমেছিল তৃণমূল। জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের খুঁজে খুঁজে মারা হচ্ছে। সাথে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল এই রাজ্যে বিজেপিদের খুঁজে খুঁজে এইভাবে মারা হবে। তার বক্তব্যে বাংলায় কাজ করা বিহার, উত্তর প্রদেশের শ্রমিকদের কথা উঠে এসেছিল। 


বিজেপির অভিযোগ, এই ধরণের বক্তব্যের কারণে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বাংলায় একটা বিদ্বেষের পরিবেশ সৃষ্টি করছে তৃণমূল। যদিও পাল্টা তৃণমূলের দাবী, বাংলায় সকলে শান্তিতে আছে। এই ধরণের ঘটনা অনভিপ্রেত। বিজেপি শাসিত রাজ্যে পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। কিন্তু বাংলায় পুলিশ তৎপর।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad