নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০৫ নভেম্বর: এ যেন রক্ষকই ভক্ষক। বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল এক সিভিক ভলেন্টিয়ার বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি মালদা জেলার হবিবপুর থানা এলাকার। থানায় লিখিত অভিযোগের পরও অধরা অভিযুক্ত। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে। হবিবপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মালদা জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ নির্যাতিতা ওই মহিলা।
মহিলার অভিযোগ, কালী পুজোর রাতে ঘরে একাই ছিলেন, কাপড় পাল্টানোর সময় হঠাৎ ঢুকে পড়ে ওই সিভিক। এরপর হাত, মুখ চেপে ধরে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করে। তাঁর চিৎকারে মা-বাবা ও প্রতিবেশীরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। নির্যাতিতা মহিলার আরও অভিযোগ, ঘটনার প্রতিবাদ করলে লোহার রড নিয়ে তাঁর বাবা-মা ও তাঁকে মারধর করে অভিযুক্ত। ঘটনায় মাথা ফেটে যায় নির্যাতিতর বাবার। এরপর পরের দিন অর্থাৎ শনিবার প্রথমে হবিবপুর থানায় ও পরবর্তীতে সোমবার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে এই বিষয়ে। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় হবিবপুর থানায় একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মারধর এবং আরও দুজনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার। এই বিষয় অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেন নি।
গৃহবধূ তথা নির্যাতিতার অভিযোগ, হবিবপুর থানার পুলিশ প্রথমে তার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। পরবর্তীতে কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখার পর তার অভিযোগ পত্র জমা নেয়। কিন্তু অভিযোগ করার এতদিন পরেও অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে পুলিশ পদক্ষেপ করেনি, তাই এবার তারা জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ারের নাম মনোজ মণ্ডল। তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার। তাঁর দাবী তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্রে করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানতোর। উত্তর মালদা বিজেপি সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, পশ্চিমবঙ্গ এখন ধর্ষণে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। অর্থাৎ এই তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গকে ভারতবর্ষে দর্শনের দিক থেকে এক নম্বর স্থান অধিকার করেছে। কালী পুজোর রাতে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটা নিন্দনীয় ঘটনা। এর সঙ্গে জড়িত একজন সিভিক ভলেন্টিয়ার। কিন্তু আজকে সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও রকম পদক্ষেপ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আজকে তারা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দ্বারস্ত হয়েছেন। আজকে একজন সিভিক ভলেন্টিয়ারের সাথে পুলিশ আধিকারিক সব একসাথে মিলেমিশে গিয়েছে। আসলে সবার কাছে একটাই বার্তা যাচ্ছে, পুলিশ এই ধর্ষকদের উৎসাহিত করছে। এই পশ্চিমবঙ্গে শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।'
অপরদিকে, মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র আশিস কুন্ডুর কথায়, 'হবিবপুরের যে ঘটনাটি ঘটেছে সেই ক্ষেত্রে হবিবপুর থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ পুলিশের কাজ করবে আইন কাউকে হাতে নিতে দেবে না। পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দিতে হবে আর বিজেপি যত কম কথা বলে তত ভালো। ভারতবর্ষের মানুষ হাথরাসের ইতিহাস জানে। বাংলায় আইন-শৃঙ্খলা যথেষ্ট রয়েছে এবং আগামীতেও থাকবে।'
No comments:
Post a Comment