নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ১২ নভেম্বর: উৎসব মিটতেই ফের ময়দানে ইডি। বাংলাদেশ থেকে হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা, সোনা ও নারী পাচার এবং ক্রিকেট বেটিং তদন্ত করতে তল্লাশি শুরু করেছে কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ড সহ ১৭ টি জায়গায় মঙ্গলবার সকালে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইডি।
বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ এবং হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের (মানি লন্ডারিং) অভিযোগে মঙ্গলবার সকালের দিকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর পূর্ব পাড়া এলাকায় পিন্টু হালদারের বাড়িতে ইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা অভিযান চালায়। পেশায় ক্যাব ড্রাইভার পিন্টুর বাড়িতে ইডির চার জন প্রতিনিধি আসেন। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের সাথে আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরেই এই তল্লাশি। সোনা, ক্রিকেট বেটিং সহ একাধিক হুন্ডির মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের সাথে পিন্টু হালদার যুক্ত থাকতে পারে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি ওই জেলার হাবড়াতেও এক রেডিমেড পোশাক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও ইডির হানা। ইডির একটি প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে পার্থ সাহা নামে ওই ব্যবসায়ীর ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। অন্যদিকে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি বাইরে থেকে ঘিরে রেখেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
মধ্যমগ্রামেও পিংকি বসু নামে এক মহিলার ফ্ল্যাটেও চলছে ইডির অভিযান। অভিযোগ, ভারতীয় মুদ্রাকে বাংলাদেশী মুদ্রায় পরিবর্তন করে ফের সেই মুদ্রাকে ভারতীয় মুদ্রায় পরিবর্তন করতেন পিংকি। কালো টাকা সাদা করার জন্য হাওলার মাধ্যমে বাংলাদেশে যোগাযোগ রাখতেন পিংকি।
এর পাশাপাশি বারাসত-সোদপুর রোডের ধরে বোর্ডঘর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন 'স্নো ফক্স বার কাম রেস্টুরেন্ট' ইডির অভিযান চলছে।
প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গা নারীদের ঝাড়খণ্ডে পাচারের অভিযোগের ঘটনায় গত সেপ্টেম্বরে ঝাড়খণ্ডের রাঁচির বারিয়াতু পুলিশ থানায় অর্থ পাচার সংক্রান্ত মামলায় একটি এফআইআর দায়ের করে ইডি। অভিযোগ ওই বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা নারীরা তাদের আসল নাম পরিবর্তন করে ভারতীয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করেছিল। ইডির ধারণা পশ্চিমবঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডে একটি বড় চক্র এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।
ঝাড়খণ্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও অনুপ্রবেশ ইসুটি নির্বাচনী প্রচারণায় বড় আকার ধারণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ প্রত্যেকেই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) জোট সরকারকে নিশানা করেছেন। তাদের অভিযোগ কেবলমাত্র ভোট ব্যাংক রাজনীতির কারণেই তারা বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন দিচ্ছে। এমনকি অনুপ্রবেশের জন্য ঝাড়খণ্ডের জনবিন্যাসেও তারতম্য ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দলের নেতারা।
No comments:
Post a Comment