প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৮ নভেম্বর : সাধারণত ভবনগুলি ভিত্তি থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যন্ত তৈরি করা হয়। তবে তামিলনাড়ুতে অবস্থিত একটি মন্দির এই নিয়ম ভঙ্গ করে। কোনও ভিত্তি ছাড়াই উল্টো করে নির্মিত এই মন্দির সবাইকে অবাক করে। তামিলনাড়ুতে বিভিন্ন যুগে রাজারা অনেক বড় মন্দির তৈরি করেছিলেন। এই মন্দিরগুলির বেশিরভাগই তাদের স্থাপত্য এবং বিশাল গোপুরামের জন্য বিখ্যাত। যখনই কোনও ভক্ত মন্দিরে যান, প্রথম যে জিনিসটি তার নজরে পড়ে তা হল মন্দিরের লম্বা গোপুরম।
এই মন্দিরের সবচেয়ে অনন্য বিষয় হল এটি পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ বিষয় হল এই মন্দিরটি পাহাড়ের অন্য কোনও স্থান থেকে দেখা যায় না। এটি দক্ষিণ ভারতের ইলোরা নামে পরিচিত। এই মন্দিরের স্থাপত্য এবং নির্মাণশৈলী যারা এটি দেখে তাদের বিস্মিত করে। পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই স্থাপনাটি এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে মিশে গেছে, যা এটিকে আরও অনন্য করে তুলেছে।
কালাগুকুমালা কেতবন কুদাইভার মন্দিরটি অষ্টম শতাব্দীতে পান্ড্য রাজা দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। কথিত আছে যে এটি পান্ড্য রাজা মারাঞ্জদয়ান নির্মাণ করেছিলেন। এই মন্দিরটিকে তামিলনাড়ুর তাঞ্জোর মন্দিরের থেকেও প্রাচীন বলে মনে করা হয়। মজার বিষয় হল এই মন্দিরটি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একটি বড় ‘বি’ আকৃতির পাহাড় খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে। তৎকালীন কারিগরদের দক্ষতার প্রমাণ এই যে, পাহাড় কেটে একটি পূর্ণাঙ্গ মন্দিরের আকার দেওয়া নিজেই একটি অলৌকিক ঘটনা।
মন্দিরের দেওয়ালে ও পাথরে এখনও ছেনি চিহ্ন দেখা যায়, যা সেই সময়ের কারিগরদের দক্ষতার পরিচয় দেয়। এই চিহ্নগুলি থেকে অনুমান করা যায় যে এই আশ্চর্যজনক কাঠামোটি প্রস্তুত করতে কত পরিশ্রম এবং সময় ব্যয় হয়েছে। মন্দিরের গোপুরমে দক্ষিণামূর্তি, নরসিংহ ও মুরুগানের সুন্দর মূর্তি দেখা যায়। এই মূর্তিগুলি এত সূক্ষ্মভাবে খোদাই করা হয়েছে যে দর্শকরা সেই সময়টিকে জীবন্ত মনে করেন।
এই মন্দিরটি ভগবান শিবকে উৎসর্গ করা হয়েছে। শিব ভক্তদের কাছে এই স্থানটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বলা হয় যে এই মন্দিরে আধ্যাত্মিক শক্তির একটি কেন্দ্রবিন্দু রয়েছে, যা ভক্তদের শান্তি ও প্রশান্তি প্রদান করে। যদিও মন্দিরের বিমান ও টাওয়ারে ভাস্কর্য খোদাই করা আছে, তবুও কিছু কারণে এই মন্দিরটি অসম্পূর্ণ বলে মনে হয়। এর অসম্পূর্ণ গঠন এবং অনন্য শৈলী এটিকে আরও রহস্যময় করে তোলে।
এই মন্দির নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত আছে। কোনও কারণে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায় বলে জানা গেছে। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে সে সময় হঠাৎ কিছু যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। একই সময়ে, কিছু পণ্ডিত মনে করেন যে মন্দির নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের অভাবে এটি সম্পূর্ণ করা যায়নি।
No comments:
Post a Comment