নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৯ ডিসেম্বর, কলকাতা : ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। শনিবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। সবকিছু মিটে যাওয়ার পর দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে বুদ্ধিজীবীদের নীরবতা নিয়ে খোলাখুলি কথা বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূল নেতা।
বৃহস্পতিবার দিল্লীর এইমস-এ মারা যান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে দেশে জাতীয় শোক পালিত হচ্ছে। তাঁর মৃত্যুতে অনেকেই শোক প্রকাশ করলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবী, অনেকেই নীরব ছিলেন। তিনি মূলত ক্রীড়া এবং চলচ্চিত্র জগতের লোকদের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। যারা আধুনিক ভারতকে রূপ দিয়েছেন তাদের একজনের মৃত্যুর পর তৃণমূল নেতা অনেক প্রশ্ন তুলেছেন।
রবিবার মনমোহনকে প্রথমে শ্রদ্ধা জানালেন এক্স হ্যান্ডেল। তারপর একে একে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত দেশবাসীকে নতুন বছরে নতুন কিছু ভাবার বার্তা দিতেও দেখা যায় তাকে।
অভিষেক তার এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'ভারত তার অন্যতম সেরা রাজনীতিবিদ ডঃ মনমোহন সিংকে হারিয়েছে। যার অপরিসীম বুদ্ধিমত্তা ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দেশের অর্থনীতির পুনর্গঠন করেছে। ১৯৯১ সালে অর্থনৈতিক সংস্কারের স্থপতি হিসাবে তাঁর অবদান অপরিসীম, যা ভারতের বৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির পথ প্রশস্ত করেছিল।'
এরপর তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'রাজনৈতিক মাঠে দলের সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও তাকে সম্মান দেওয়া হয়েছে। তবে ক্রীড়া ও চলচ্চিত্র জগতের 'রোল মডেল'রা এ ব্যাপারে যেভাবে নীরব রয়েছেন তা দুঃখজনক। ডঃ মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে এই লোকদের নীরবতা তাদের অগ্রাধিকার, দায়িত্ববোধ এবং নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বর্তমানে, জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ইস্যুতে এই 'আইকন'দের নীরব থাকা একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ থেকেই বোঝা যায় সরকারের ভয়ে নীরবতা।'
শুধু মনমোহনের মৃত্যুতেই নয়, দেশের অন্যান্য ইস্যুতেও এই লোকেরা উদাসীন বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতার। তিনি বলেন, 'এ ধরনের উদাসীনতা নতুন কিছু নয়। কৃষকদের আন্দোলন, সিএএ-এনআরসি বিক্ষোভ এবং মণিপুরের বর্তমান সংকটের সময় এই সেলিব্রিটিরা নীরব ছিলেন। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তার নীরবতা সাধারণ মানুষের সংগ্রামের প্রতি উদ্বেগজনক উদাসীনতাকে প্রতিফলিত করে। তিনি মানুষের কাছে খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু দেশের পাশে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি পরিষ্কার করার প্রয়োজন হলে তারা দেখা করতে পারছে না।'
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, 'নতুন বছরে পা দিতে চলেছি কাকে রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করব তা ভাবার সময় এসেছে। যারা সাহসিকতা প্রদর্শন এবং তাদের দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে তাদের কর্মজীবন এবং স্বাচ্ছন্দ্যকে গুরুত্ব দেয়, তাদের প্রতারণা করা বন্ধ করতে হবে। যারা আসলে দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করেন, দেশপ্রেমিক, সৈনিক তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। যারা সমাজে পিছিয়ে আছে, যারা লেখাপড়া করতে পারে না, যে পরিবার খেতে পারে না তাদের সাহায্য করি।'
No comments:
Post a Comment