ডেস্ক রিপোর্ট,৬ জানুয়ারি: কালো টাকা সাদা করতে জামাই কল্যাণময়কে ব্যবহার করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবার জামাই এর উপর নজরদারের জন্য নিজের ঘনিষ্ঠ লোকজনকেও কাজে লাগাতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই সব তথ্য ইডির তদন্তকারীদের দিয়েছেন জামাই কল্যাণময়।
জামাই কল্যানময় ভট্টাচার্যের দেওয়া লিখিত বয়ানকে হাতিয়ার করছে ইডি। সম্প্রতি বিচার ভবনের সিবিআই এর বিশেষ আদালতে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠনের শুনানিতে কয়েক হাজার পাতার নথি জমা দিয়েছে ইডি। সেই নথিতেই নগদ কোটি টাকা দিয়ে বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের নামে সম্পত্তি কিনেছিলেন পার্থ। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
সূত্রের খবর, চার্জসিটের ওই নথির ৬০৯৭,৬১০২,৬১০৪ ও ৬১০৬ নম্বর পাতায় কল্যানময়ের লিখিত বয়ান পেশ করেছেন তদন্তকারী অফিসার। প্রয়াত স্ত্রীর নামে ট্রাস্টের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করে পার্থর দুর্নীতির কৌশল প্রমাণ করতে তার জামাই কল্যাণ বয়ের বয়ানকে হাতিয়ার করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রের খবর। কল্যাণময় বর্তমানে প্রবাসী। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াত স্ত্রীর নামে ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য হিসেবে তাকে অভিযুক্ত করে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জসিট জমা দিয়েছে ই ডি। আদালতের তরফে সমন করা হলে কলকাতা এসে আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন কল্যাণময়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই লিখিত বয়ানে জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের জুনে ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা নগদ দিয়ে বাবলি চ্যাটার্জী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এর নামে কলকাতা পুরসভার পাটুলি থানা এলাকায় কমবেশি ১৮ কাঠা জমি কেনা হয়েছিল। ওই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়ি থেকে কল্যাণময় সংগ্রহ করেছিলেন। লিখিত বয়ানে কল্যাণময় দাবি করেছেন,২০১৯ সালের জুনে পার্থ ঘনিষ্ঠ এক দালাল মারফত ওই জমি কেনা হয়েছিল ।ওই জমির তিনটি দলিল রয়েছে এবং বাজার দরের থেকে অনেক কম দামে ওই জমি কেনা হয়। বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি হাসপাতাল তৈরীর জন্য ওই জমি কেনা হচ্ছে বলে তাকে জানিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তদন্তকারী সূত্রের দাবি, জমি কেনার টাকার উৎস হিসেবে ট্রাস্টের আয়করের নথিতে বিভিন্ন দাতাদের মাধ্যমে চেকের টাকা জমা পড়ার হিসেব দেওয়া হয় । এবং স্বেচ্ছায় ওই টাকা দান করা হয়েছে বলে নথি তৈরি করা হয়। তবে যেকে সই করা ব্যক্তিদের অস্তিত্বের বিষয়ে তিনি জানেন না বলে বয়ানে জানিয়েছেন কল্যাণময়। ইরি সূত্রের দাবি ২০২৪ সালের ১৫ এবং ১৮ মার্চ কল্যাণময় এর কাছ থেকে লিখিত বয়ান নেওয়া হয়েছিল। কল্যাণময় স্বেচ্ছায় ওই লিখিত বয়ান দিয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি আরো জানিয়েছিলেন কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করেই এই বয়ান তিনি দিয়েছেন। তদন্তকারী সংস্থা আইনিভাবে এই বয়ান ব্যবহার করতে পারবে বলেও কল্যাণময় তার বয়ানে লিখেছেন। তদন্তকারী সূত্রের দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রীর নামে তৈরি ট্রাস্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব লেনদেন প্রাক্তন মন্ত্রীর নির্দেশে করা হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ আর একজন ব্যক্তি বিষয়টি দেখাশোনা করেন বলেও কল্যাণময় তা লিখিত বয়ানে জানিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment