প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৭ জানুয়ারি: পড়াশোনা মনোযোগ দেয় না, রাগে নয় বছরের ছেলেকে দেওয়ালে মাথা ঠুকে মারলেন বাবা। এখানেই শেষ নয়, এরপরে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুনও করা হয়। কুকীর্তি ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি দেহ সৎকারের আয়োজন করে পরিবার। কিন্তু তার আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ। শিশুর মৃতদেহ নিজেদের উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং তার বাবা, কাকা ও ঠাকুরমাকে গ্ৰেফতার করে। মহারাষ্ট্রের পুনেতে ঘটেছে এই ঘটনা।
জানা গিয়েছে, মৃত শিশুর নাম পীযূষ বিজয় ভাণ্ডলকার।শিশুটির মা তাদের সঙ্গে থাকতেন না। অনেকদিন আগেই তিনি শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে চলে যান। পুলিশ জানিয়েছে, বিজয় ভাণ্ডলকার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে পিয়ন হিসাবে কাজ করতেন এবং তার স্ত্রী কয়েক বছর আগে তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে শিশুটি বাড়িতেই ছিল, তখনই এই ঘটনা ঘটে। লেখাপড়ায় মনোযোগ না দেওয়ায় বিজয় ছেলেকে বকাঝকা শুরু করেন। এমনকি রাগের বশবর্তী হয়ে, তিনি তার ছেলের মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেন এবং এরপর তাকে গলা টিপে খুন করেন বলে অভিযোগ।
শিশুটির মৃত্যুর পর পরিবারের লোকজন বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করে। পুলিশ জানিয়েছে, বিজয় ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা (ঠাকুরমা ও কাকা) শিশুটির দেহ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং গল্প ফাঁদে। তাঁরা জানান, শিশুটি হঠাৎ পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। তবে, সেইসময়ই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপরেই পরিবারের সদস্যরা শিশুটি দেহ দাহ করার প্রস্তুতি নেয় তড়িঘড়ি এবং কাছের লোকদের কাছেও মিথ্যা গল্প বলেন। কিন্তু পরিবারের সন্দেহজনক আচরণের কারণে রাত ৯টার দিকে স্থানীয় কয়েকজন পুলিশে খবর দেয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ যখন সেখানে পৌঁছায়, তখন শিশুটির মৃতদেহ শ্মশানে চিতার ওপর পড়ে ছিল। অনেক চেষ্টার পর পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। রিপোর্টে জানা যায়, শ্বাসরোধে ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে।
পুনের গ্রামীণ পুলিশ সুপার পঙ্কজ দেশমুখ বলেছেন যে, মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে ভাদগাঁও নিম্বালকার থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে শিশুটির বাবা বিজয় গণেশ ভাণ্ডলকার, ঠাকুরমা শালান ভাণ্ডলকার এবং কাকা সন্তোষ সোমনাথ ভাণ্ডলকারকে। ঘটনার আরও তদন্ত চলছে।
No comments:
Post a Comment