প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৯ জানুয়ারি: হরিয়ানা-পাঞ্জাবের শম্ভু সীমান্তে বিক্ষোভকারী ৫৫ বছর বয়সী এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার। জানা গিয়েছে, বিষাক্ত দ্রব্য খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তথ্য অনুযায়ী, কৃষক সালফাস ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। এতে তাঁর অবস্থা গুরুতর হওয়ার পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কৃষক নেতারা জানান, তিন সপ্তাহের মধ্যে বিক্ষোভস্থলে এ ধরণের এটি দ্বিতীয় ঘটনা। মৃত কৃষকের নাম রেশম সিং, তারনতারান জেলার পাহুবিন্দের বাসিন্দা। রেশম সিং এই নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, শম্ভু এবং খানৌরি সীমান্তে ১১ মাস ধরে আন্দোলন চলা সত্ত্বেও সরকার সমস্যার সমাধান করছে না। উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর শম্ভু সীমান্তে এক কৃষক রণজোধ সিংও আত্মহত্যা করেছিলেন।
ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (এমএসপি) গ্যারান্টির দাবীতে কেন্দ্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কৃষকরা গত এক বছর ধরে শম্ভু সীমান্তে বিক্ষোভ করছেন। কৃষকরা জানিয়েছেন যে রেশম সিংকে পাতিয়ালার রাজীন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি মারা যান। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা (অ-রাজনৈতিক) এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা-এর ব্যানারে কৃষকরা গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মাঝে শম্ভু এবং খানৌরি সীমান্তে ধর্না-অবস্থানে রয়েছেন। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের দিল্লী যেতে বাধা দেয়।
এসবের মাঝেই কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের বলেন, কৃষক রেশম সিং আজ সালফাস খেয়ে মারা গেছেন। রেশম সিংয়ের মৃত্যুর জন্য সরকার দায়ী। মরার আগে তিনি বলেছিলেন, সরকার তাঁদের দাবীর প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে না, জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল আমরণ অনশনে রয়েছেন কিন্তু সরকার এখনও কথা বলছে না, তাই তিনি আত্মহত্যা করছেন। তাই যারা রেশম সিংকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিৎ।
তিনি আরও বলেন, 'রেশম সিংয়েরও অনেক ঋণ ছিল, তাই তার পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা এবং পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়া উচিৎ। সরকার দাবী মেনে না নিলে রেশম সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে না এবং ময়নাতদন্তও করা হবে না।'
কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ সমিতির সারওয়ান সিং পান্ধের, রেশম সিংয়ের ছবি সমাজমাধ্যমেও শেয়ার করেছেন। ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, 'তরনতারনের পাহুবিন্দ গ্রামের কৃষক রেশম সিং আজ শম্ভু সীমান্তে বিষাক্ত পদার্থ খেয়েছেন। তিনি সরকারের নীতিতে অসন্তুষ্ট ছিলেন।'
উল্লেখ্য, কৃষক নেতা জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়ালের অবস্থা খুবই সংকটজনক। মেডিক্যাল বুলেটিন জারি করে, অবতার সিং বলেছেন যে, ডাল্লেওয়াল ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন না এবং তিনি মঙ্গলবার প্রায় এক ঘন্টা অজ্ঞান ছিলেন। বুধবার, জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী তাঁর কৃষকদের বলেন, তাঁর মৃত্যুর পরেও যেন অনশন জারি রাখেন।
তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী কাকা সিং কোটরার কাছে পাঠানো একটি বার্তায়, ডাল্লেওয়াল বলেন, তাঁর পার্থিব শরীর যেন ধর্না স্থানে রাখা হয় এবং অন্য কোনও নেতা অনশন চালিয়ে যান।' কোটরা বলেন, অনশনকারী নেতা কারও সাথে দেখা করতে স্পষ্ট না করে দিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment