প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৫ জানুয়ারি: স্ত্রীকে বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী যুবক। মৃত্যুর আগে সেই ভিডিও তিনি রেকর্ড করে গেলেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলার পাশাপাশি তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য অনুরোধও করেন। গুজরাটের বোটাদ জেলার জামরালা গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। গুজরাট পুলিশ ওই ব্যক্তির স্ত্রীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছে।
জানা গিয়েছে, এখানকার ৩৯ বছর বয়সী সুরেশ সাথদিয়া কাছের নওয়াগাঁওয়ের যুবতী জয়ার সাথে বিয়ে হয়। সুরেশ এবং জয়ার ১৭ বছরের দাম্পত্য। তাঁদের চারটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই দুজনের মধ্যে কলহ শুরু হয়। অভিযোগ, কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্কের পর প্রতিবারই তাঁর স্ত্রী তাঁর বাপের বাড়িতে চলে যেতেন। যুবকের বারবার বোঝানো সত্ত্বেও তিনি ফিরে আসতে রাজি হয়নি। এবারেও তাঁর স্ত্রী ঝগড়া করে বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। সুরেশের চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি ফিরে আসতে রাজি হননি। সুরেশ যখন তাঁকে নিতে তাঁর শ্বশুর বাড়িতে যায়, তখন তাঁর স্ত্রী ফিরে আসতে স্পষ্ট ভাবে না করে দেয়। এরপর হতাশা হয়ে সুরেশ বাড়িতে ফিরে আসেন এবং গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ৩০ শে ডিসেম্বর নিজের ঘর থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
আত্মহত্যার আগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে একটি ভিডিও করেন তিনি। তিনি বলেন যে, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এবং তাঁর মৃত্যুর জন্য তাঁর স্ত্রী দায়ী। এর জন্য স্ত্রীকে শিক্ষা দিতে পরিবারের সদস্যদের কাছে দাবী জানান তিনি। ভিডিওতে তিনি বলেন, "তাঁকে এমন শিক্ষা দিও, যা সে সারাজীবন মনে রাখবে। সে আমার বা আমার সন্তানের নয়। সে আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং আমাকে মরতে বাধ্য করেছে।"
আত্মহত্যার পর সুরেশের পরিবার তাঁর ফোন থেকে এই ভিডিওটি খুঁজে পায়। এই ভিডিওটি তাঊর মোবাইল ফোনেই পাওয়া গেছে, তবে এটি কাউকে পাঠানো হয়নি বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়নি।
সুরেশের বাবা শুক্রবার থানায় এফআইআর দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি তাঁর পুত্রবধূর বিরুদ্ধে তাঁর ছেলেকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন।
তিনি জানান, পুত্রবধূ, তাঁর ছেলের সাথে বারবার ঝগড়া করে বাপের বাড়িতে চলে যেত। এফআইআরে বলা হয়েছে যে, সুরেশ তার স্ত্রীকে মানাতে তাঁর শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ফিরে আসতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুরেশ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
সুরেশের বাবা এও জানান, পরিবার শেষকৃত্য নিয়ে ব্যস্ত ছিল, যার কারণে অভিযোগ দায়ের করতে দেরী হয়েছে। সুরেশের চার বড় ভাই ও দুই বোন রয়েছে। সুরেশের বাবা বাবু সাথদিয়ার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১০৮- এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বোটাদের ডেপুটি পুলিশ সুপার এন.পি. আহির বলেন, "আমরা মহিলাকে হেফাজতে নিয়েছি এবং ভিডিওটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। আমরা অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইব, যাতে উৎপীড়নের প্রকৃতী গভীরভাবে তদন্ত করা যায়।" পুলিশ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছে। শনিবার ০৪ জানুয়ারি অভিযুক্ত স্ত্রীকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বেঙ্গালুরুতে ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের মৃত্যু, আত্মঘাতী নোট ও ভিডিওবার্তা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এরপরেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন বহু ঘটনা সামনে এসেছে। এবারে ঘটনাস্থল গুজরাট।
No comments:
Post a Comment