আমেরিকায় জন্মালেই আর নয় নাগরিকত্ব, ট্রাম্পের পদক্ষেপে কতটা প্রভাব পড়বে ভারতীয়দের ওপর? - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, January 21, 2025

আমেরিকায় জন্মালেই আর নয় নাগরিকত্ব, ট্রাম্পের পদক্ষেপে কতটা প্রভাব পড়বে ভারতীয়দের ওপর?


প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২১ জানুয়ারি: সোমবার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তিনি অনেক সরকারি আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর মধ্যে রয়েছে ক্যাপিটল হিল সহিংসতার অপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা প্রদানের পাশাপাশি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে আমেরিকাকে বাইরে করার সিদ্ধান্ত। এর সাথে ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, যার উদ্দেশ্য আমেরিকায় জন্মগত নাগরিকত্বের অবসান ঘটানো। এটি এমন একটি নীতি যা আমেরিকায় ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে।


প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত আমেরিকার অভিবাসন নীতিতে বড় ধরণের পরিবর্তনের দেখায়। এর প্রভাব এমন লক্ষ-লক্ষ শিশুর নাগরিকত্বের ওপর পড়বে, যাদের জন্ম আমেরিকায় হয়েছে এবং তাঁদের বাবা-মা কাজের ভিসায় সেখানে বসবাস করছেন বা কিছু এমন বাবা-মা, যাঁরা তাঁদের সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য আমেরিকায় পাড়ি জমাচ্ছেন। এই ধরণের যাত্রাকে বার্থ ট্রাভেল বলা হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় ক্রমবর্ধমান বার্থ ট্যুরিজম নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়ে চলেছে। 


মার্কিন সংবিধান, তার ১৪ তম সংশোধনীর ওপর ভিত্তি করে, সেই সকল ব্যক্তিকে জন্মগত নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দেয়, যাদের জন্ম আমেরিকার মাটিতে হয়েছে। তা শিশুর পিতামাতার নাগরিকত্ব যেখানকারই হোক বা তাঁদের অভিবাসন অবস্থা বৈধ বা অবৈধ হোক। আমেরিকার মাটিতে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশুকে আমেরিকান নাগরিকত্বের অধিকার প্রদানের এই বিধানটি, স্থিতি নির্বিশেষে, ১৮৬৯ সালে প্রণীত হয়েছিল।


এই বিধানটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সকল ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। বিশেষ করে গৃহযুদ্ধের পরে, পূর্বের ক্রীতদাসদের অবস্থার উন্নতির জন্য মার্কিন সংবিধানে ১৪তম সংশোধনী করা হয়েছিল। এই অধিকার লক্ষ-লক্ষ মানুষকে আমেরিকার নাগরিকত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানও সামিল রয়েছে।


ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশে এ ধরনের নাগরিকত্ব বাতিলের পদক্ষেপ করা হয়েছে। আদেশে বলা হয়েছে যে, আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী সেই শিশুদেরই জন্মগত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে যাদের বাবা-মায়ের মধ্যে একজন আমেরিকান নাগরিক বা তাঁদের একজনের কাছে বৈধ স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণ অর্থাৎ গ্ৰিন কার্ডধারী বা মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য। ট্রাম্পের এই আদেশকে অবৈধ অভিবাসন বা বার্থ ট্যুরিজম রোধ করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

ভারত ও চীনের ওপর এর কী এবং কতটা প্রভাব পড়বে?

এই আদেশ প্রবাসী ভারতীয় এবং চীনাদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে চলেছে। কারণ এই দুটি দেশের বিপুল সংখ্যক অভিবাসী আমেরিকায় বসবাস করেন এবং তাঁদের সন্তানেরা সেখানে জন্মগ্রহণ করে। এখন ট্রাম্পের আদেশ সেইসকল পেশাদার পিতামাতার জন্ম দেওয়া সন্তানের জন্মগত নাগরিকতার অবসান ঘটবে, যাঁরা অস্থায়ী কাজের ভিসা অর্থাৎ এইচ-১বি (H-1B) ভিসায় সেখানে থাকছেন এবং গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষা করছেন।  


উল্লেখ্য, আমেরিকায় ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায় আমেরিকাতে দ্রুত বর্ধনশীল অভিবাসী সম্প্রদায়। মার্কিন আদমশুমারি অনুসারে, ৪৮ লক্ষেরও বেশি ভারতীয় আমেরিকান আমেরিকায় বাস করে, যার একটি বড় অংশ তাঁদের, যারা জন্মগত নাগরিকত্ব পেয়েছেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad