প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১১ ফেব্রুয়ারি: সারা বিশ্বে হাজার হাজার মন্দির রয়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু নিজের জাঁকজমকের জন্য এবং কিছু তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য বিখ্যাত। ভারতে দেবদেবীদের উৎসর্গ করা অনেক মন্দির আছে, কিন্তু আপনি কি জানেন এমন একটি মন্দির আছে, যা ডিভোর্স টেম্পল নামে পরিচিত?
এই মন্দির বিশেষ করে মহিলাদের জন্য এবং যারা পারিবারিক সহিংসতা বা নৃশংসতার শিকার হয়েছেন। এই মন্দিরটি রয়েছে জাপানে। বহু শতাব্দী আগে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যখন জাপানে মহিলাদের অধিকার খুবই সীমিত ছিল। এখানে নারীরা মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে এবং তারা সামাজিক সমর্থনও পায়। আজ এই মন্দির নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
এক সময়ে যখন জাপানে মহিলাদের কাছে অধিকার ছিল না এবং পুরুষরা সহজেই ডিভোর্স দিতে পারতেন, এই মন্দিরটি গার্হস্থ্য সহিংসতায় ভোগা মহিলাদের আশ্রয় দিয়েছিল। স্বামীর নিষ্ঠুরতা থেকে পালিয়ে আসা মহিলাদের জন্য মন্দিরের দরজা সবসময় খোলা ছিল। এখানে তারা যে শুধুমাত্র শারীরিক নিরাপত্তাই খুঁজে পান, তা নয় বরং এমন একটি পরিবেশও পেয়েছিলেন যেখানে আধ্যাত্মিক শান্তি ও সান্ত্বনা খুঁজে পেতেন। আজও এই মন্দিরটি সেই সমস্ত মহিলাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস, যাঁরা অত্যাচারের সম্মুখীন হচ্ছেন।
ইতিহাস ৭০০ বছরের পুরনো
জাপানের কামাকুরা শহরে অবস্থিত এই মন্দিরটি প্রায় ৭০০ বছরের পুরনো এবং 'ডিভোর্স টেম্পল' নামে বিখ্যাত। এটি বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কাকুসান তাঁর স্বামী হোজো তোকিমুনের সাথে মিলে বানিয়েছিলেন। তখন মহিলাদের বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার ছিল না এবং কাকুসানও একটি অসুখী বিবাহে আটকে ছিল। তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, তিনি এমন একটি জায়গা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন, যেখানে মহিলারা তাঁদের স্বামীদের থেকে আলাদা হয়ে শান্তি ও স্বাধীনতার সঙ্গে বসবাস করতে পারেন। এই মন্দির এখনও মহিলাদের আশ্রয় ও শান্তির প্রতীক।
এই মন্দিরটি ডিভোর্সি মহিলাদের জন্য একটি বিশেষ স্থান ছিল, যেখানে তাঁরা তাঁদের স্বামীদের থেকে ডিভোর্স নেওয়ার আগে তিন বছর থাকতে পারতেন। পরে এই সময়কাল কমিয়ে দুই বছর করা হয়। এখানে অবস্থান করে মহিলারা শুধু শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থই হয়নি, আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগও পেয়েছে। বহু বছর ধরে এই মন্দিরে শুধুমাত্র মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি ছিল। যদিও, ১৯০২ সালে যখন এঙ্গাকু-জি মন্দিরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন একজন পুরুষ মঠ নিযুক্ত করা হয় এবং পুরুষদের প্রবেশও শুরু হয়। তখন থেকে এই মন্দিরটি শুধু মহিলাদের জন্য নয়, পুরুষদের জন্যও একটি ধর্মীয় স্থান হয়ে ওঠে।
No comments:
Post a Comment