প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৬ ফেব্রুয়ারি: গত বছর থেকে অশান্ত বাংলাদেশে। বুধবার নতুন করে সেখানে অশান্তি ছড়িয়েছে। এরই মাঝে ভারতকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, নয়াদিল্লীতে বসে শেখ হাসিনা যদি কোনও ভাবে এখানকার রাজনীতিতে সামিল হন, তাহলে তার জন্য ভারত নিজেই দায়ী থাকবে। বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী নাহিদ ইসলাম তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, "ভারত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং তাদের কাছে এর কিছু কারণও রয়েছে। আমরা ভারতকে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে বলেছি, যা একটি কূটনৈতিক বিষয়। কিন্তু শেখ হাসিনা যদি সেখান থেকে রাজনীতি করার চেষ্টা করেন এবং সেখানে বসে রাজনৈতিক সভায় ভাষণ দেন, তাহলে এর জন্য ভারত সরকার দায়ী হবে।"
রাজধানী ঢাকায় বুধবার একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, "ফেব্রুয়ারি বা মার্চে যদি কোনও সম্ভাব্য অরাজকতা হয়, তাহলে তার জবাব দিতে আমরা রাস্তায় নেমে যাব। আমরা আমাদের বিরোধ জারি রাখব। আমাদের ঐক্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে এবং আমরা এর জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।"
নাহিদের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন শেখ হাসিনা অনলাইন মাধ্যমে তাঁর দলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দলও আরও একবার ফিরে আসার ডঙ্কা বাজিয়েছে এবং হিন্দু নিপীড়ন ও মোহাম্মদ ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।
এই প্রতিবাদে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় সহিংস বিক্ষোভও হচ্ছে। বিক্ষোভ চলাকালেই বুধবার রাতে আন্দোলনকারীরা জাদুঘরে রূপান্তরিত বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ঢাকা স্থিত বাড়ি ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুই পক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে বাংলাদেশে উত্তেজনা বাড়ছে। গত বছর বাংলাদেশে শুরু হওয়া সহিংস ছাত্র বিক্ষোভের পর কয়েক মাস ধরে ভারতে রয়েছেন শেখ হাসিনা। আন্দোলনের সময় সরকার উৎখাত হলে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে এসেছিলেন। এরপর থেকে ভারত তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এখন শেখ হাসিনা তাঁর প্রত্যাবর্তনের চেষ্টায় রয়েছেন। আর এই কারণেই শেখ হাসিনা ভারতে বসে অনলাইনের মাধ্যমে তাঁর দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে, তা আসলে তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা। শেখ হাসিনা বলেন, মোহাম্মদ ইউনূস তাঁকে ও তাঁর বোনকে মারতে পরিকল্পনা করেছিল।
ফেসবুক লাইভে দলীয় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, "এসব হামলার পরও যদি আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, তাহলে নিশ্চয়ই কিছু কাজ করতে হবে। এটা যদি না হত, তাহলে এতবার মৃত্যুকে কীভাবে পরাজিত করতে পারতাম?"
ভাষণে শেখ হাসিনা তাঁর বাসভবনে হামলার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং কেন তাঁর বাড়িতে আগুন দেওয়া হয় তা জানতে চান। তিনি বাংলাদেশের জনগণের কাছে ন্যায়বিচার দাবী করেন। তাঁর কথায়, 'তিনি কি বাংলাদেশের জন্য কিছুই করেননি? এতকিছুর পরও কেন তাঁর এত অপমান করা হচ্ছে?'
No comments:
Post a Comment