প্রেসকার্ড নিউজ লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০৯ ফেব্রুয়ারি: সিগারেট, হুক্কা বা বিড়ি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে, একথা প্রায় সকলেরই জানা। কিন্তু এগুলো না খেলেও ফুসফুসের ক্যান্সারের শিকার হতে পারেন। সাধারণত ধূমপানকারীদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ দেখা গেলেও এখন বায়ু দূষণও এর কারণ হয়ে উঠছে। সম্প্রতি ল্যানসেট রেসপিরেটরি মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা অনুসারে, যারা ধূমপান করেন না তাদের মধ্যে ক্যান্সারের ক্রমবর্ধমান ঘটনা বায়ু দূষণের কারণে হতে পারে। সমীক্ষা অনুসারে, ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত কিন্তু কখনও ধূমপান করেননি এমন রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ল্যানসেটের এই গবেষণাটি করেছেন ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার এবং ডব্লিউএইচও-এর বিজ্ঞানীরা। গবেষণার সময়, গ্লোবাল ক্যান্সার অবজারভেটরি ২০২২-এর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছিল, যেখানে দেখা গেছে, অ্যাডেনোকার্সিনোমা নামক ক্যান্সার যারা ধূমপান করেন না, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের একটি রূপ।
অ্যাডেনোকার্সিনোমা হল একটি ক্যান্সার, যা শরীরে শ্লেষ্মা এবং পাচক তরল তৈরি করে এমন গ্রন্থিতে বিকাশ লাভ করে। গবেষকরা মনে করেন যে, ধূমপানের সাথে এই ক্যান্সারের খুব একটা সম্পর্ক নেই। তবে বায়ু দূষণ এর একটি বড় কারণ হতে পারে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী রিপোর্ট করা সমস্ত ক্যান্সারের ক্ষেত্রে, ৫৩-৭০শতাংশ এমন লোকেরা ছিলেন, যারা কখনও ধূমপান করেননি।
ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণে মোট মৃত্যুর মধ্যে অধূমপায়ীদের স্থান পঞ্চম। এশিয়ার দেশগুলোতে এ সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মহিলারি। ২০২২ সালে, প্রায় ৮০ হাজার মহিলা যাদের ফুসফুসের ক্যান্সার ছিল তাদের সরাসরি বায়ু দূষণের সাথে সম্পর্কিত পাওয়া গেছে।
গবেষকরা মনে করেন, বায়ু দূষণ ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্রে একটি প্রধান অবদানকারী। বিশেষ করে পিএম ২.৫ (PM 2.5)- এর মতো দূষিত কণা ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে এবং কোষের ক্ষতি করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
আইএআরসি (IARC) বিজ্ঞানী ফ্রেডি ব্রে বলেন, 'আজকাল ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে দ্রুত বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল ধূমপানের অভ্যাস এবং বায়ু দূষণের পরিবর্তন। এ অবস্থা এড়াতে হলে সরকারকে তামাক নিয়ন্ত্রণ ও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।'
No comments:
Post a Comment