নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি, ০৪ ফেব্রুয়ারি: 'তৃণমূলের রাজত্বে বাংলা জুড়ে ধ্বংসের রাজত্ব চলছে', এভাবেই রাজ্যের শাসক দলকে নিশানা করলেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। মঙ্গলবার বিকালে আরামবাগে সিপিএমের দলীয় কর্মসূচিতে এক ঝটিকা সফরে আসেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। আরামবাগে বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন অমিয় পাত্র, দেবলিনা হেমব্রম সহ একাধিক নেতৃত্ব।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'তৃণমূলের রাজত্বে বাংলা জুড়ে ধ্বংসের রাজত্ব চলছে।' তিনি বলেন, 'টালিগঞ্জে পরিচালকরা ঠিক করবেন না। অরূপের ভাই স্বরূপের নির্দেশ না মানলে ফিল্ম ইন্ডাষ্ট্রি উঠে যাবে। এরা বুঝতে পারছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি মাটির মানুষ! শিল্প, সংস্কৃতি সবই জলাঞ্জলি যাচ্ছে।পরিচালকদের স্বরূপের পিছন পিছন ঘুরতে হবে। কারণ এই সমস্ত পরিচালকদের নাকি যোগ্যতা নেই। মাপকাঠি ঠিক করছেন তৃণমূলের নেতারা। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।'
যোগেশ চন্দ্র কলেজ নিয়ে সুজন বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি যে কলেজে পড়তেন যোগেশ চন্দ্র ল কলেজ, সেই কলেজে সরস্বতী পুজো করা যাবে না। পুলিশি প্রহরায় পুজো হচ্ছে। দেখেছেন কখনও? ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক সবাই স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুজো করবেন আর বন্দুক হাতে পুলিশ। কেউ কখনও দেখেছেন বাম আমলে? ধর্মকে কখনওই রাজনীতিতে বসাননি জ্যোতিবাবুরা। আর এরা ধর্মকে ব্যবহার করছে ধর্মের জন্য নয়, রাজনীতির দখলদারির জন্য।
বাম নেতা বলেন, "সীতানাথ কলেজ, যোগেশ চন্দ্র কলেজ, হরিণঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয় এই সমস্ত জায়গায় সরস্বতী পুজো ছিল স্কুলেরই ছেলেমেয়েদের। এখন সেগুলো হয়ে গেছে নেতাদের দাদাগিরি ও দখলদারির জন্য। আর এই জন্যই ছাত্রছাত্রীদের মন্ত্রীকে বলতে হচ্ছে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী কেউই জাস্টিস দিতে পারছেন না। শিক্ষাঙ্গন-সহ গোটা রাজ্য ধ্বংস স্তূপে পরিণত হচ্ছে। তার পরিণতি আমাদের দেখতে হচ্ছে।"
মদন মিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, "মদন মিত্র যা বলেছেন তা কোনও কথা নয়, ওটা স্বীকারোক্তি। পঞ্চায়েতের সদস্য হতে গেলে টাকা, ভোটে দাঁড়াতে গেলে টাকা, এমএলএ, এমপি থেকে কাউন্সিলর, এমনকি দলের পদ পেতে গেলে টাকা লাগে। কিন্তু এত পরিমাণ টাকা লাগে সেটা আমরা জানতাম না। এত টাকা আসে কোথা থেকে? এগুলো লুটের টাকা, চুরির টাকা আর এই টাকা ব্যবস্থা করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মদন তাই বলেছে, 'টাকা দিয়েছি, মন্ত্রীত্ব পাইনি'। মনের দুঃখে তাই বলে দিয়েছেন।"
২৬ হাজারের ভবিষ্যত কি? বিকাশ ভট্টাচার্য বলেছেন, প্যানেল বাতিল করতে হবে।আর এস এফ আই বলেছে,যোগ্য অযোগ্য বাছাই করতে হবে- এই প্রশ্নের উত্তরে সুজন বলেন, "পশ্চিম বাংলায় বাম আমলে যোগ্য- অযোগ্য কখনও ওঠেনি। তাহলে এখন কথাটা উঠল কেন? স্কুল সার্ভিস কমিশন তো মেনে নিয়েছে যে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ চাকরি দিয়ে বলছেন যে, স্কুল সার্ভিস কমিশন রেকমেন্ড করেছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন বলছে, 'আমরা রেকমেন্ড করিনি'। তাহলে কি সবটাই ভুতুরে কাণ্ড চলেছে? ওএমআর সিট রাস্তায় পড়ে। তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে, শিক্ষা ক্ষেত্রে, চাকরি ক্ষেত্রে যারা যোগ্য তাঁদের কারও চাকরি খারিজ করা যাবে না।"
No comments:
Post a Comment