বিনোদন ডেস্ক, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১২:৩০:০৯: কন্নড় সিনেমার পাওয়ার স্টার হিসাবে পরিচিত অভিনেতা পুনীথ রাজকুমার, কর্ণাটকের একজন বিখ্যাত অভিনেতা ছিলেন, যাঁকে এখনও কোটি মানুষ মনে রেখেছেন। আজকের দিনে অর্থাৎ ১৭ মার্চ, ১৯৭৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা। কিন্তু মাত্র ৪৬ বছর বয়স (২৯ অক্টোবর, ২০২১)-এ প্রয়াত হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান পুনীথ। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই সরকার গোটা বেঙ্গালুরু শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে এবং দুই দিনের জন্য মদ বিক্রি বন্ধ করে দেয়। তিনি আজ আমাদের মাঝে না থাকলেও সারা বিশ্বে তাঁর অগনিত ভক্ত রয়েছেন। তিনি তাঁর অভিনয় জীবনের মাধ্যমে যে নাম-খ্যাতি অর্জন করেছেন, তার চেয়েও তাঁর মহৎ কাজের জন্যই বেশি শিরোনামে রয়েছেন। এমন একজন অভিনেতার জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
পুনীথ ছিলেন কন্নড় ভাষার সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা, যাঁর ১৪টি ছবি একটানা ১০০ দিন ধরে প্রেক্ষাগৃহে চলেছিল। বাস্তব জীবনেও খুব উদার ছিলেন এই অভিনেতা। সমাজসেবার জন্য, তিনি ২৬টি অনাথালয় এবং ৪৬টি দরিদ্র শিশুদের জন্য বিনামূল্যে স্কুল পরিচালনা করছিলেন। পুনীথ তাঁর চোখ দান করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর, কর্ণাটক জুড়ে ১ লাখ মানুষ তাদের চোখ দান করেছিলেন কারণ তাঁরা পুনীথের পথ অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন। 'প্রেমদা কণিকে' ছবির মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়। শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন বহু চলচ্চিত্রে। ৬ মাস বয়সে বড় পর্দায় আবির্ভূত এই সুপারস্টার আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর ভালো কাজের কারণে মানুষের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
২০১৯ সালে উত্তর কর্ণাটকে বন্যা হয়েছিল। এই কঠিন সময়ে মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন পুনীত রাজকুমার। দ্বিতীয়বারের মতো, করোনা মহামারীর সময়, তিনি কর্ণাটক সরকারের ত্রাণ তহবিলে ৫০ লক্ষ টাকা দান করেছিলেন। অভিনেতা ৪৬টি বিনামূল্যে স্কুল, ২৬টি অনাথ আশ্রম, ১৬টি বৃদ্ধাশ্রম এবং ১৯টি গো-আশ্রয় কেন্দ্র সঞ্চালন করতেন। এছাড়াও তিনি অনেক কন্নড় ভাষী বিদ্যালয়কে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন।
পুনীথ রাজকুমারের বয়স যখন ১০ বছর, তিনি জাতীয় পুরস্কার পান। 'বেত্তাদা হুভু' ছবির জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। এতে তাঁকে দেখা গেছে শিশুশিল্পী হিসেবে। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ কন্নড় চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কার, তিনটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার দক্ষিণ এবং দুটি কর্ণাটক রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পুনীথ একজন গায়ক এবং টিভি উপস্থাপকও ছিলেন। এটি তাঁর ভক্তদের জন্য আনন্দের বিষয় যে, তিনি ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে আইপিএল দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। পুনীথের বাবা রাজকুমার ছিলেন প্রথম কন্নড় অভিনেতা যিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত হন।
No comments:
Post a Comment