প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৭:১০:০১ : বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আবারও একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে দেওয়া বিশেষ ক্ষমতা আবারও বাড়ানো হয়েছে। মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বৃহস্পতিবার একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে বলেছে যে এই ক্ষমতাগুলি পরবর্তী ৬০ দিনের জন্য বলবৎ থাকবে।
বাংলাদেশী সংবাদপত্র প্রথম আলোর মতে, এই নতুন মেয়াদ ১৫ মার্চ থেকে শুরু হবে। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন দেশের অবনতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আধিকারিকদের এই বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়। এর অধীনে, ক্যাপ্টেন এবং তদুর্ধ পদমর্যাদার সামরিক আধিকারিকদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। এখন এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ইউনূস সরকার সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন সরকারের ভিত্তিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং সরকারি নীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের সময় পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে শেখ হাসিনার সরকারকে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করতে হয়। রাস্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, কিন্তু সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি এবং অবশেষে ৫ আগস্ট ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়। এর পর, ৮ আগস্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় এবং এর নেতৃত্ব নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারপর থেকে সেনাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদানের নীতি বাস্তবায়িত হয়, যা এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বাড়ানো হয়েছে।
ইউনূস এবং হাসিনার মধ্যে তিক্ততা বিবেচনা করে, এটা অস্বীকার করা যায় না যে ইউনূস সরকারের এই নীতির আসল উদ্দেশ্য কেবল আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা নয়, বরং শেখ হাসিনার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনের প্রচেষ্টা বন্ধ করাও। আওয়ামী লীগের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন যে হাসিনাপন্থী গোষ্ঠীগুলির উপর নজর রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে চাপ দেওয়া হচ্ছে এবং এটি বিরোধী দলগুলির কার্যকলাপও দমন করতে পারে।
এখন প্রশ্ন হলো ইউনূস সরকার কি সত্যিই আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি করতে চায়, নাকি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করছে? কারণ সেনাবাহিনী যত বেশি ক্ষমতা পাবে, দেশটির প্রশাসনে তত বেশি আধিপত্য বিস্তার করবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ বাড়তে পারে, যা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপরও প্রশ্ন তুলবে।
No comments:
Post a Comment