Friday, April 18, 2025

প্যারাসিটামল খেলে ড্যামেজ হতে পারে লিভার? সমাজমাধ্যম পোস্টে হইচই, বিস্ফোরক সত্য জানালেন বিশিষ্ট চিকিৎসক সারিন


লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৩০:০০: যে কোনও ধরণের সমস্যায় মানুষ প্রায়ই প্যারাসিটামল ওষুধ খান। করোনা মহামারীর পর প্যারাসিটামল খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় কারণ সে সময় প্যারাসিটামলকে সবচেয়ে নিরাপদ মনে করা হতো। এই ধারা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি, আমেরিকায় বসবাসরত একজন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডাঃ পালানিপ্পান মানিকাম প্যারাসিটামল নিয়ে ট্যুইট করেছেন, যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন যে, ভারতে লোকেরা ক্যাডবেরি জ্যামের মতো প্যারাসিটামল খাচ্ছেন এবং এটি লিভারের ক্ষতি করতে পারে। এরপর সর্বত্র প্যারাসিটামল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এখন প্রশ্ন হল প্যারাসিটামল খেলে কি সত্যিই লিভারের ক্ষতি হতে পারে? চলুন জেনে নিই লিভারের সবচেয়ে বড় চিকিৎসকের কাছ থেকে।


দেশের প্রখ্যাত লিভার চিকিৎসক শিবকুমার সারিন এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। বারবার প্যারাসিটামল খাওয়া ভালো নয়। বর্তমানে আমেরিকা ও ইউরোপে প্যারাসিটামল যকৃতের ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় কারণ। আসলে, লিভারে গ্লুটাথিয়ন নামক একটি উপাদান আছে, যা লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। গ্লুটাথিয়নই প্যারাসিটামলকে নিরপেক্ষ করে এবং লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধ করে। যখন একজন ব্যক্তি অ্যালকোহল পান করেন, তখন গ্লুটাথিয়নের পরিমাণ কমে যায়। স্থূলতাও কমায় গ্লুটাথিয়ন। যদি আপনার শরীরে গ্লুটাথিয়নের পরিমাণ কম থাকে, তাহলে এমন অবস্থায় অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খেলে লিভার ড্যামেজ হতে পারে।


ডাঃ সারিন বলেন, আমাদের শরীরে প্যারাসিটামল শোষণ করার একটি ক্ষমতা রয়েছে। এর চেয়ে বেশি প্যারাসিটামল খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত দিনে মাত্র ২ থেকে ৩টি প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খাওয়া উচিৎ। আপনি পরিবর্তে অর্ধেক ট্যাবলেট দিনে ৩-৪ বার নিতে পারেন। এতে লিভারের কোনও ক্ষতি হবে না। প্যারাসিটামল শুধু জ্বরের ওষুধই নয়, এটি একটি ব্যথানাশকও। এই কারণেই এটি শুধুমাত্র একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পরে ব্যবহার করা উচিৎ। নিজে থেকে বারবার এই ওষুধ খাওয়া লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।


স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ ওষুধই আমাদের লিভারে বিপাক হয়। আমাদের লিভার ওষুধ, রাসায়নিক এবং অন্যান্য টক্সিন ভেঙ্গে শরীর থেকে বের করে দিতে কাজ করে। আমরা যখন কোনও ওষুধ বারবার খাই, তখন এই ওষুধটি সরাসরি লিভারে চলে যায় এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। এমন অবস্থায় ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় বা বারবার খেলে লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে লিভার ড্যামেজ এবং হেপাটাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে।

No comments:

Post a Comment