প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৫:০১ : রাম নবমী উপলক্ষে রামেশ্বরমে নতুন পাম্বান রেল সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর পরে, তিনি রামেশ্বরমে অবস্থিত বিখ্যাত রামানাথস্বামী মন্দিরেও প্রার্থনা করবেন। এরপর, দুপুর ১.৩০ মিনিটে, তিনি তামিলনাড়ুতে ৮,৩০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিভিন্ন রেল ও সড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন এবং সেগুলো জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। পাম্বান সেতু হল ভারতের প্রথম উল্লম্ব লিফট রেলওয়ে সমুদ্র সেতু। সেতুটি ২.০৭ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা পাক প্রণালী অতিক্রম করে, যা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদান করবে।
নতুন সেতুটি ১৯১৪ সালে নির্মিত পুরাতন পাম্বান সেতুর স্থলাভিষিক্ত হবে, যা একটি ক্যান্টিলিভার কাঠামো ছিল এবং রামেশ্বরম দ্বীপকে ভারতীয় মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করেছিল। সময়ের সাথে সাথে সেতুটি ক্রমবর্ধমান পরিবহন চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং সামুদ্রিক পরিবেশের প্রভাবে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১৯ সালে, কেন্দ্রীয় সরকার এই নতুন সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয়।
পাম্বান সেতুর বৈশিষ্ট্য
১. নেভিগেশনাল স্প্যান: সেতুর ৭২.৫ মিটার দীর্ঘ নেভিগেশনাল স্প্যানটি ১৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে যার ফলে বড় জাহাজগুলি এর নিচ দিয়ে চলাচল করতে পারে।
২. উচ্চতা বৃদ্ধি: এই সেতুটি পুরাতন সেতুর তুলনায় ৩ মিটার উঁচু, যা সামুদ্রিক যোগাযোগ উন্নত করবে।
৩. উপাদানের গুণমান: সেতুটি শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য উচ্চমানের স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি এবং এর পৃষ্ঠটি বিশেষ প্রতিরক্ষামূলক রঙ দিয়ে লেপা।
৪. নকশা: সেতুর কাঠামোতে দুটি ট্র্যাক রয়েছে।
পাম্বান সেতুর প্রয়োজন কেন ছিল?
১. পুরাতন পাম্বান সেতু ক্রমবর্ধমান যানজট এবং আধুনিক পরিবহনের চাহিদা মেটাতে অক্ষম ছিল।
২. নতুন পাম্বান সেতুটি ভারী রেল ট্র্যাফিক এবং উচ্চ-গতির ট্রেনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
৩. এই সেতুটি সমুদ্রপথের জন্যও সুবিধাজনক।
নির্মাণ এবং কৌশল
১. উপুল আধুনিক প্রকৌশল পদ্ধতি এবং স্টেইনলেস স্টিলের মতো উন্নত উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়।
২. সেতুর দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করার জন্য সামুদ্রিক পরিবেশে স্থায়িত্ব বজায় রাখার জন্য ক্ষয়-বিরোধী আবরণ ব্যবহার করা হয়।
৩. সাইটের চ্যালেঞ্জগুলি বিবেচনা করে লিফট স্প্যানটি অটো লঞ্চিং পদ্ধতিতে চালু করা হয়েছিল এবং হাইড্রোলিক জ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সঠিক স্থানে স্থাপন করা হয়েছিল।
চ্যালেঞ্জ
১. নির্মাণ কাজের সময় ঝড়, ঘূর্ণিঝড় এবং ভূমিকম্পের মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
২. সেতুর নির্মাণ সামগ্রী দূরবর্তী স্থানে পরিবহনে অসুবিধা ছিল।
৩. এই সমস্ত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, প্রকল্পটি নিরাপদে সম্পন্ন হয়েছে।
নতুন পাম্বান সেতু ভারতের ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোগত সক্ষমতা প্রতিফলিত করে। এই সেতুটি গোল্ডেন গেট, টাওয়ার এবং ওরেসুন্ডের মতো বিশ্বমানের সেতুর কাতারে যোগ দিয়েছে। এই সেতুটি ভারতীয় প্রকৌশলের দক্ষতা প্রদর্শন করে এবং ভৌগোলিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতা প্রমাণ করে। এর আয়ুষ্কাল ১০০ বছরেরও বেশি বলে অনুমান করা হয়।
No comments:
Post a Comment