"মাথা খাস না তো", শুধুই কি সংলাপ, না লুকিয়ে আছে বাস্তবতা! জানুন এর পেছনের বিজ্ঞান - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, April 20, 2025

"মাথা খাস না তো", শুধুই কি সংলাপ, না লুকিয়ে আছে বাস্তবতা! জানুন এর পেছনের বিজ্ঞান



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩০:০১ : বলা হয় যে, মানুষের মস্তিষ্কই তাকে অন্যান্য জীবন্ত প্রাণী থেকে আলাদা করে তোলে। মানুষের চিন্তাভাবনা এবং বোঝার ক্ষমতাই তাকে একজন সত্যিকারের মানুষ করে তোলে। কিন্তু আপনি কি জানেন যে অতিরিক্ত চাপ এবং কাজের চাপের কারণে আমাদের মস্তিষ্কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে?


আসলে, আমরা যা কিছু করি, আমরা যা কিছু, তা আমাদের মস্তিষ্কে গঠিত কোষগুলির মধ্যে সংযোগের উপর ভিত্তি করে, যাকে সিনাপ্স বলা হয়। আগে বিশ্বাস করা হত যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্ক সাধারণত 'স্থিতিশীল' থাকে, কিন্তু বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে মস্তিষ্ক নমনীয় এবং পরিবর্তনশীল।



এর অর্থ হল আমাদের মস্তিষ্কও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। সেই সংলাপটি হল, 'মাথা খাস না তো'...কিন্তু এটি কেবল একটি সংলাপ নয়, বাস্তবতা। আর যারা আমাদের মস্তিষ্ক খায় তারা আর কেউ নয়, আমরাই। তার মানে আমাদের মস্তিষ্ক নিজেই তার অংশগুলো খায়। এই প্রক্রিয়াটিকে ফ্যাগোসাইটোসিস বলা হয়।


ফ্যাগোসাইটোসিস হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোষগুলি ছোট কোষ বা অণুগুলিকে গ্রাস করে এবং সিস্টেম থেকে নির্মূলের জন্য তাদের গ্রাস করে। তার মানে এটা বলা ভুল হবে না যে ছোট কোষগুলি বড় কোষের খাদ্য হয়ে ওঠে। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও এর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যেখানে শ্বেত রক্তকণিকা রোগজীবাণু (যা রোগের কারণ হতে পারে) খায়, ফলে আমাদের শরীরের উপর যে কোনও ধরণের খারাপ প্রভাব থেকে মুক্তি পায়।



মস্তিষ্কে যে ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়াটি ঘটে তার উদ্দেশ্য হল মস্তিষ্কের উৎপাদনশীলতা বজায় রাখা, অর্থাৎ আমাদের মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম রাখা, একে হোমিওস্ট্যাসিস বলা হয়। মস্তিষ্ক আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং এটি ২৪ ঘন্টা একটানা কাজ করে। অনুমান করা হয় যে এটি বেঁচে থাকার জন্য এবং প্রয়োজনীয় কার্য সম্পাদনের জন্য শরীরের শক্তি সরবরাহের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহার করে। এর মানে হল আমাদের মস্তিষ্ক একটি কোষীয় শক্তিকেন্দ্রের মতো।



আমাদের মস্তিষ্কের কোষের মধ্যে এবং ভেতরে সর্বদা অসংখ্য জটিল প্রক্রিয়া ঘটে চলেছে এবং এই প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রচুর ধ্বংসাবশেষ তৈরি হয়। ঘর পরিষ্কার করার সময় বা রান্না করার সময় আমরা যেমন কিছু বর্জ্য ফেলে দিই, তেমনি মস্তিষ্কও এই বর্জ্য অপসারণের জন্য ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। আপনি জেনে অবাক হবেন যে এই কোষীয় ধ্বংসাবশেষ অপসারণের সবচেয়ে বড় কাজটি ঘটে যখন আমরা ঘুমিয়ে থাকি এবং মস্তিষ্ক ফ্যাগোসাইটোসিসের মাধ্যমে এটি পরিষ্কার করে।



কিন্তু এটি কোনও স্বাভাবিক দৈনন্দিন প্রক্রিয়া নয়, কখনও কখনও মন থেকে অনেক কিছু মুছে ফেলা বা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। এমন পরিস্থিতিতে, আমাদের মস্তিষ্কও 'ছাঁটাই'র কাজ শুরু করে, বিশেষ করে যখন আমরা বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছাই। এটি শৈশবে জমে থাকা সমস্ত অপ্রয়োজনীয় স্নায়বিক সংযোগ দূর করে। এবং তারা যে সম্পদগুলি অপচয়মূলকভাবে ব্যবহার করছিল তা আরও কার্যকর জিনিসে রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক আরও দক্ষ এবং প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে। আর এই সবই সম্ভব কারণ আমাদের মস্তিষ্ক আক্ষরিক অর্থেই নিজেকে খাচ্ছে, কিন্তু এমনভাবে যা এটিকে আরও ভালো করে তোলে, আরও খারাপ করে না।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad