কলকাতা, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৭:০১ : যোগ্য এবং অযোগ্যের মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভব হল না। দেশের সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের পুরো এসএসসি প্যানেল বাতিল করেছে। ২৫,৭৫৩ জন চাকরি হারিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেছেন যে নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'যারা অন্যান্য সরকারি বিভাগ থেকে এখানে এসেছেন তারা কেবল তাদের পুরনো জায়গাতেই যোগদান করতে পারবেন। এই কাজ তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।'
এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর ২০১৬ চাকরিপ্রাপকরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা বলেন,'১০ বছর আগে পরীক্ষা দিয়েছিলাম কী করে জানব যে সেই সময় দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির মাশুল দিতে হল যোগ্যদের। অন্যায় করল অন্যরা আর দায় নিতে হচ্ছে আমাদের। দুর্নীতি না করেও দায় নিতে হল, সংসার-সন্তান আছে চালাবো কি করে।'
আরেকজন চাকরিপ্রাপক বলেন, "আজ, যোগ্যরাও রাস্তায় বসল। এই ধরণের দুর্নীতি দেশে বেনজির। কিন্তু আমাদের কী হবে? আমরা কেন দুর্নীতির ফাঁদে পা দেব? আমার বাড়িতে সন্তান এবং বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন, আমি কীভাবে পরিবারকে সাহায্য করব? এতদিন কাজ করার পর কেন আমাদের কষ্ট সহ্য করতে হবে?"
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ এপ্রিল, একটি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বার রশিদীর সমন্বয়ে গঠিত কলকাতা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল ঘোষণা করে। ফলস্বরূপ, ২৫,৭৫৩ জন চাকরি হারান। যারা মেয়াদউত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বেকারদের একটি অংশও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ১৯ ডিসেম্বর সেই মামলার শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারকে একের পর এক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি রাজ্য সরকারের অবস্থান কী তা জানতে চেয়েছিলেন। রাজ্য সরকার কি মনে করে বৈধ এবং অবৈধ চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভব, নাকি সম্ভব নয়? রাজ্য সরকার বলছে, বৈধ এবং অবৈধদের আলাদা করা সম্ভব।
No comments:
Post a Comment